গ্রাফিক: মনোজ রায়।
যেন তিন পড়শি একসঙ্গে পঙ্ক্তি ভোজনে বসেছে! পৃথিবী, শুক্র, মঙ্গল। নিজের কক্ষপথে চলতে চলতে শুক্র আর মঙ্গল এখন পৃথিবীর সঙ্গে এমন অবস্থানে রয়েছে যে পৃথিবী এবং তার দুই নিকট পড়শিকে প্রায় সমরেখায় দেখা যাচ্ছে। মহাকাশ নিয়ে যারা চর্চা করেন তাঁরা জানাচ্ছেন, আষাঢ়ের আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে প্রায় খালি চোখেই দেখা সম্ভব এই মহাজাগতিক ঘটনা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমনটা ঘটেছে এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট। এর পরে ২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ফের এমন ঘটবে। কিন্তু এ বারের মতো এত কাছাকাছি অবস্থান, ০.৫ ডিগ্রি হবে না। সহজ করে বললে, আকাশের দিকে তর্জনী তুলে ধরলে আঙুলের দুপাশে দেখা যাবে আমাদের নিকটতম এই দুই প্রতিবেশী গ্রহকে।
নবদ্বীপে এই মহাজাগতিক কাণ্ড পর্যবেক্ষণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ‘ধ্রুবতারা’ নামে সমাজমাধ্যমের একটি গ্রুপ। মূলত মহাকাশ চর্চা করাই গ্রুপটির কাজ। গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা পুষ্পেন্দু মজুমদার বলেন, “খালি চোখেই শুক্রকে উজ্জ্বল দেখায়। পশ্চিম আকাশের সন্ধ্যাতারা। তবে লাল রঙের মঙ্গলকে খালি চোখে ধরা একটু মুশকিল। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে টেলিস্কোপে সন্ধ্যা ৭.২০ মিনিট পর্যন্ত দেখা যাবে। জুলাই ১৩ ও ১৪ সবচেয়ে কাছে রয়েছে তিন গ্রহ।”
পুষ্পেন্দু জানান, এ সময়ে আকাশে আরও কয়েকটি আকর্ষণীয় দৃশ্য রয়েছে। তার অন্যতম, সন্ধ্যার পর দক্ষিণ আকাশে বিশালাকার বৃশ্চিক রাশি। আর একটু রাতের দিকে দক্ষিণ আকাশে শনি ও বৃহস্পতি। বর্ষার আকাশে মেঘ না থাকলে ধূলিকণা কম থাকায় স্বচ্ছতর হয়। পুষ্পেন্দু বলেন, “অন্য সময়ে বিভিন্ন মহাজগতিক ঘটনা আমরা টেলিস্কোপে আগ্রহীদের দেখাই এবং ব্যাখ্যা করি। কিন্তু এ বার করোনার কারণে তা করা যাচ্ছে না।”
আকাশ চর্চার কথা মাথায় রেখে এবং সাধারণের উপযোগী বিষয় নিয়ে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য ‘ধ্রুবতারা’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয় দু’বছর আগে। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গার দুশোর বেশি সদস্য নিয়মিত আকাশ চর্চা করছেন তাতে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার, ভিন্ রাজ্য এবং ভারতের বাইরে বসবাসকারী সদস্যেরা চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যতম সদস্য, চিকিৎসক আনন্দময় মুখোপাধ্যায়ের মতে, “অসুখে ভারাক্রান্ত মাটির পৃথিবীর মানুষকে মানসিক ভাবে শক্তি এবং মুক্তি দুই-ই দিতে পারে মহাকাশ। তাই আমরা চাই, আকাশ চর্চার প্রসার ঘটুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy