রেশন সামগ্রী পাচারের ব্যবসার অভিযোগে ধৃত প্রশান্ত পাল। শনিবার বীরনগরে। —নিজস্ব চিত্র।
বছর কয়েক আগেও ভ্যান চালিয়ে রেশন সামগ্রী সরবরাহ করতেন বীরনগরের প্রশান্ত পাল। গত কয়েক বছরের মধ্যে দ্রুত উত্থান হয় তাঁর। বছর চারেকের মধ্যেই তিনি কিনে ফেলেন দু’টি ছোট মালবাহী গাড়ি, একটি মোটরভ্যান। তাঁর এই ফুলে-ফেঁপে ওঠা চোখে পড়েছিল এলাকার লোকের। শনিবার বাড়িতে মজুত চোরাই রেশন সামগ্রী নিয়ে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পরে আরও বড় চক্র পিছনে রয়েছে বলে পাড়াপড়শি সন্দেহ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বীরনগরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চড়কডাঙা পাড়ার বাসিন্দা প্রশান্তের বাবা ভ্যান চালকের কাজ করতেন। পরে প্রশান্তও একই কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটরের থেকে পণ্য নিয়ে রেশন দোকানে পৌঁছে দেওয়া ছিল তাঁর কাজ। আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল ছিল না। সরকারি আবাস প্রকল্পে আবেদন করে ২০১৯-২০ সালে ‘হাউসিং ফর অল’ প্রকল্পে তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী পালের নামে অনুমোদন পান। বছরখানেক আগে বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে। সেই বাড়ির গা ঘেঁষে সিঁড়ি তুলে আরও ঘরের কাজ আংশিক হয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত তিনৃ-চার বছরের মধ্যে একটি হাতফেরতা এবং একটি নতুন ছোট মালবাহী গাড়ি কিনে ফেলেন প্রশান্ত। সরকারি বস্তা থেকে রেশন সামগ্রী বার করে তা অন্য বস্তায় ভরার কাজ তিনি গোপনে অন্যত্র করতেন, ইদানীং বাড়ি লাগোয়া কলাবাগানে করছিলেন বলে দাবি পড়শিদের অনেকেরই। তাঁর গাড়িতে নিয়মিত এই সব পণ্য কার এবং কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, অনেক সময়েই জানতে চেয়েছেন তাঁরা। প্রশান্ত বলতেন, বিভিন্ন রেশন ডিলারদের দোকানে সে সব পৌঁছে দিতে যাচ্ছেন, কিন্তু কখনও বীরনগরের কোনও ডিলারের নাম তিনি করতেন না। তাঁর বাড়িতে ১০-১২ জন শ্রমিককে কাজ করতেও দেখেছেন পড়শিরা।
পড়শিদের একাংশের বক্তব্য, খুব একটা বিলাসী জীবন কাটাতেন না প্রশান্ত। তবে ইদানীং পণ্যবাহী গাড়ি কেনা এবং আনুষঙ্গিক কিছু ঘটনায় আন্দাজ করা যাচ্ছিল যে তাঁর হাতে কাঁচা টাকা আসছে। তাঁর বাড়িতে রেশন সামগ্রী মজুত করে পরে তা পাচার করা হচ্ছে বলে সন্দেহ আগে থেকেই ছিল এলাকাবাসীর। এ দিন সেটাই ধরা পড়ে যায়।
কী ভাবে ‘হাউসিং ফর অল’ প্রকল্পে স্ত্রীর নামে সরকারি আবাস পেলেন প্রশান্ত? যে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তিনি বাসিন্দা, গতবার তার পুরপ্রতিনিধি ছিলেন বীরনগরের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান গোবিন্দ পোদ্দার। তৃণমূল নেতা গোবিন্দ বর্তমানে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি। তাঁর বক্তব্য, "ও যখন আবেদন করে এবং অনুমোদন পায় তখন ওদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই ওদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কেউ যদি দোষী হয়, সে শাস্তি পাবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy