Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Doctor Death

শ্বশুরবাড়ির অনেককে ডাক থানায়

পুলিশের আধিকারিকেরা তাঁদের কাছে নানা ঘটনা বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। তারপরে অবশ্য রাতে তাঁরা ফিরে যান।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ০৮:৫৪
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অনির্বাণ দত্তের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলল বহরমপুর থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমে বহরমপুর থানার পুলিশ বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে অনির্বাণ দত্তের বর্তমান শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে অনির্বাণের শ্বশুর শাশুড়ি এবং বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তারপরে বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ বহরমপুর থানার পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে অনির্বাণের শ্বশুর ও শাশুড়ি বহরমপুর থানায় আসেন। শুক্রবার অনির্বাণের শ্বশুরবাড়ির দুই পরিচারিকা এবং গাড়ির চালককে বহরমপুর থানার পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছিল। শুক্রবার দুপুর তাঁরা বহরমপুর থানায় এসেছিলেন।

পুলিশের আধিকারিকেরা তাঁদের কাছে নানা ঘটনা বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। তারপরে অবশ্য রাতে তাঁরা ফিরে যান। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই বহরমপুর থানা থেকে অনির্বাণের প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি বহরমপুরে আছেন কি না। তবে তিনি বহরমপুরে নেই।

অনির্বাণের মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক অবশ্য থামতে চাইছে না। শুক্রবার মৃতের প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি বলেন, ‘‘অনির্বাণের মৃত্যু পরবর্তী ঘটনাক্রম রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে।’’

অনির্বাণের নিকট আত্মীয়রা যেমন প্রশ্ন তুলছেন, তেমনই সমাজ মাধ্যমেও অনেকেই অনির্বাণের মৃতদেহের ময়না তদন্ত না করে দ্রুত সৎকার করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

সাগরদিঘির মণিগ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক উত্তম ঘোষ সম্পর্কে অনির্বাণের মামা হন। শুক্রবার উত্তম বলেন, ‘‘অনির্বাণের মৃতদেহ তাঁর জন্মস্থানে আনা হল না, কেন তাঁর কর্মস্থলে দেহ নিয়ে যাওয়া হল না, ময়না তদন্ত ছাড়াই দ্রুততার সঙ্গে কেন তাঁর দেহ সৎকার করে দেওয়া হল, এ সব প্রশ্ন রয়েছে। যার জেরে আমরা সাগরদিঘি থেকে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে বেরিয়েও মাঝপথে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। এত দ্রুত সৎকারের রহস্য কী জানতে চাই।’’ যদিও অনির্বাণের বর্তমান শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে সে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

অনির্বাণের বর্তমান শ্বশুর শান্তব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে মেয়ে অসুস্থ। ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে তাঁকে রাখতে হচ্ছে।’’

তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে শান্তব্রত বলেন, ‘‘স্বাভাবিক মৃত্যুর শংসাপত্র দিয়েছেন চিকিৎসক। স্বাভাবিক মৃত্যুর কারণে ময়না তদন্ত করানো হয়নি। সবাইকে জানিয়ে দেহ সৎকার করা হয়েছে। অনির্বাণের সৎ মা, দিদিসহ অন্য আত্মীয়রাও এসেছিলেন।’’

আইএমএ-র রাজ্যের সহ সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবে হোক। সমগ্র চিকিৎসক সমাজ সর্বজনপ্রিয় অনির্বাণের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত। ময়না তদন্ত না করে দাহ কার্য সম্পন্ন করা অনুচিত হয়েছে এবং বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। অনির্বাণের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটিত হওয়া উচিত।’’

ইতিমধ্যে চিকিৎসকদের দু’টি সংগঠন অনির্বাণের মৃত্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছে।

অনির্বাণের ছেলেকে সৎকারের কাজ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তবে সেটি পুলিশের তদন্তের বিষয় নয়। তবুও পুলিশের তরফে অনির্বাণের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে যেমন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তেমনই তাঁদেরও থানায় ডেকে কথা বলা হয়েছে। কী ঘটনা ঘটেছিল, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy