ভাস্করের গলায় মাঝারি মাপের একটি ত্রিশূলের উল্টো দিক গেঁথে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র।
ত্রিশূল কাণ্ডে আপাতত প্রশ্নের তিনটি ফলাই অস্বস্তির খোঁচা দিচ্ছে।
এক, আহত ভাস্কর রামের মোবাইল ফোন কোথায় গেল? দুই, সেই মোবাইল ফোনে কী ছিল যা মুছে দিতে বলে বারবার ফোন আসছিল? তিন, ভাস্করকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গয়েশপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক-সহ দুই সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর এসএফআই এখন কী ভাবে ক্ষতয় মলম লাগাবে?
ত্রিশূল রহস্যের সুরাহা করতে আপাতত ভাস্করের মোবাইল ফোনই খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ। ভাস্করের বোন সুপর্ণা সেনগুপ্তের অভিযোগ, তাঁর দাদার মানিব্যাগ, এটিএম এবং ফোন ধৃত বিক্রম সরকারেরাই নিয়ে গিয়েছে। ফোনটি পাওয়া গেলেই আসল ঘটনা জানা যাবে। যদিও সুপর্ণা তাঁর লিখিত অভিযোগে এ সব কিছু জানাননি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে পুলিশ ফোনের বিষয়টি জানতে পারে।
গত রবিবার রাতে গয়েশপুর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কানপুরের আনন্দপল্লি এলাকায় বচসা চলাকালীন ভাস্করের গলায় মাঝারি মাপের একটি ত্রিশূলের উল্টো দিক গেঁথে দেওয়া হয়। সেই অবস্থায় তাঁকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কলকাতায় রেফার করা হয়। ভোরে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে ত্রিশূলটি বার করা হয়।
এসএফআইয়ের গয়েশপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিক্রম সরকারই ত্রিশূলটি ভাস্করের গলায় গেঁথে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তার সঙ্গে ছিল লোকাল কমিটিরই সদস্য জয় বণিক। দু’জনেই কলেজ পড়ুয়া। সুপর্ণার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার গভীর রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ভাস্করের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, বিক্রমেরা নেশাগ্রস্ত ছিল না। কোনও প্রমাণ লোপাটের জন্য প্রাণে মারতেই পিছন দিক থেকেই ত্রিশূল চালানো হয়েছিল। তীব্র আক্রোশ না থাকলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। ভাস্কর বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন। রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কে কন্নন বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”
এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে এসএফআই। যদিও ঘটনাটি জানার পরেই সোমবার তড়িঘড়ি দু’জনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সবুজ দাস বলেন, “কেউ যদি ব্যক্তিগত ভাবে খারাপ কাজ করে, সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। আমাদের সংগঠনে থেকে এ সব করা যায় না। ওদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
এসএফআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, গয়েশপুরে সংগঠনের মুখ ছিল বিক্রমই। ফলে তার বদলে কে সভাপতি সেটা বড় প্রশ্ন। সংগঠনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, যথাসময়ে আলোচনা করে তা ঠিক করা হবে। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের প্রাক্তনীদের কেউ কেউ আবার অভিযোগ করছেন, জেলার এসএফআই সংগঠন বেশি রকম জেলা সভাপতি-নির্ভর হয়ে পড়েছে। যাঁরা তাঁর মতের বিরোধিতা করতেন, বগুলায় এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলনের পর তাঁদের অনেককেই নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটি তথা নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অলকেশ দাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সবুজ অবশ্য দাবি করছেন, “এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাদের সংগঠন ব্যক্তির নির্দেশে চলে না। যখন যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, সে তা পালন করে।” অলকেশ দাস এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy