Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

থমথমে কুচিয়ামোড়া, গ্রামে বসল পুলিশ ক্যাম্প

শনিবার সন্ধ্যার পরে সোহেল রানা, খাইরুদ্দিন শেখ ও রহিদুল হালসানার দেহ ময়নাতদন্তের পরে গ্রামে ফেরে। চাপা পরিবেশের মধ্যে বাড়ি লাগোয়া এলাকায় দেহ কবর দেওয়া হয়। জখম ব্যক্তি এখনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

গ্রামের পথে পুলিশি টহল, রবিবার কুচিয়ামোড়ায়। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

গ্রামের পথে পুলিশি টহল, রবিবার কুচিয়ামোড়ায়। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:৪৫
Share: Save:

ঘটনার পরের দিনও থমথমে কুচিয়ামোড়া। গ্রামের মোড়ে মোড়ে পুলিশের জটলা, ঘনঘন যাতায়াত করছে পুলিশের গাড়ি। পুরুষশূন্য গ্রামে মহিলা ও শিশুদের উঁকিঝুঁকি। শনিবারের ঘটনায় তিন জনের মৃত্যুর পরে আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় পুলিশ। রবিবার থেকে গ্রামে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামের পঞ্চায়েত ভবনে বসানো হয়েছে সেই স্থায়ী ক্যাম্প। সেখানে এক জন এসআই ছাড়াও থাকবেন তিন জন এএসআই ও ১৫ জন কনস্টেবল। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে সর্বক্ষণের জন্য একটি গাড়িও বরাদ্দ হয়েছে ওই ক্যাম্পের জন্য। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে রবিবার। গ্রামে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।’’

শনিবার সন্ধ্যার পরে সোহেল রানা, খাইরুদ্দিন শেখ ও রহিদুল হালসানার দেহ ময়নাতদন্তের পরে গ্রামে ফেরে। চাপা পরিবেশের মধ্যে বাড়ি লাগোয়া এলাকায় দেহ কবর দেওয়া হয়। জখম ব্যক্তি এখনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অন্য দিকে এ দিনও অনেকে গ্রাম ছেড়েছেন আতঙ্কে। তাঁদের দাবি, ‘‘অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ঘর ছাড়ছি। এর আগে যখনই গ্রামে খুন হয়েছে তার বদলা নেওয়া হয়েছে ঘটনার পরে পরেই।’’

গ্রামের বাসিন্দা সাগির মণ্ডলের দাবি, ‘‘একটা সময় গন্ডগোল-খুন-জখম ছিল আমাদের গ্রামের নিত্য দিনের ঘটনা। অবস্থা সামাল দিতে সেই সময় গ্রামের পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল দীর্ঘদিন। তার পরে প্রায় একযুগ শান্ত ছিল গ্রাম। আবারও যেন সেই দিন ফিরে আসছে আমাদের গ্রামে।’’

শনিবার ভোরে কুচিয়ামোড়ার ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে যেমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঠিক তেমনই পুলিশের কপালেও ভাঁজ ফেলেছে তিনটি খুন। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে গুলির লড়াই চলেছে। এমনকি পুলিশকে তাক করেও গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে নির্বাচনে সময় এলাকাজুড়ে যে নাগাড়ে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল, আদতে যে তা তেমন কিছুই নয় সেটাও এই ঘটনা থেকে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলেও পুলিশের কাছে আগাম কোনও খবর ছিল না কেন তা নিয়েও নানা মহলে উঠছে প্রশ্ন।

ডোমকলের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘শনিবার যা ঘটল তাকে মোটেও ছোট করে দেখা উচিত নয়। এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল। অথচ পুলিশ, গোয়েন্দাদের কাছে তার আগাম কোনও খবরই ছিল না? এটা কিন্তু কোনও ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। এখন পুলিশ-প্রশাসন নড়েচড়ে বসছে। গ্রামে বসছে পুলিশ ক্যাম্প। কিন্তু যা হওয়ার তা তো হয়েই গেল!’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘নির্বাচনের সময় ডোমকল মহকুমা থেকে একাধিক পুলিশ কর্তারা বদলি হয়েছেন। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে ডোমকলের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা কমবেশি সকলেই হাতের তেলোর মতো চিনতেন ডোমকলকে। নতুন যাঁরা এসেছেন তাঁরা ডোমকলকে ভাল ভাবে চেনার আগেই শেষ হয়ে গেল তরতাজা তিনটি প্রাণ!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Domkal Murder Clsah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy