Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

পরিচয়পত্র হাতে যাতায়াত, নিজভূমেই পরবাসী ওঁরা

ধানতলা থানার দত্তপুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে ঝোরপাড়া, হাবাসপুর, শ্রীরামপুর, কালোপুর ইত্যাদি গ্রাম। কৃষি-নির্ভর কয়েক হাজার বাসিন্দার বসবাস ওই সব গ্রামে।

Labor

সীমান্তের হাবাসপুর গ্রামে বিড়ি তৈরিতে ব্যস্ত বালিকা বিশ্বাস। মঙ্গলবার ধানতলার হাবাসপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৩ ০৭:৫০
Share: Save:

পানীয় জল আনা হোক কিংবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছোনো, সব জায়গায় যেতে সচিত্র পরিচয়পত্র জমা রাখতে হয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে। নিজের দেশের ভূখণ্ডে বাস করেও আজ মানুষগুলি যেন পরবাসী। ভোট আসে, যায়। সে সময়ে বিভিন্ন দলের নেতারাও আসেন প্রচারে। কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলেই ধানতলা থানার সীমান্তবর্তী কাঁটাতার ঘেঁষা গ্রামে খোঁজ রাখেন না কেউ-ই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই সীমান্তের গ্রামের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ভোট দিয়ে হবে কী?

ধানতলা থানার দত্তপুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে ঝোরপাড়া, হাবাসপুর, শ্রীরামপুর, কালোপুর ইত্যাদি গ্রাম। কৃষি-নির্ভর কয়েক হাজার বাসিন্দার বসবাস ওই সব গ্রামে। গ্রামের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতি নদী। নদীর পূর্ব দিকেই রয়েছে বাংলাদেশ। সীমান্তের কাঁটাতার পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত করেছে দুই দেশকে। কাঁটাতারের পশ্চিমে রয়েছে দত্তপুলিয়ার একাধিক গ্রাম। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৮ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানেরা সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৫৬ সাল থেকে তাঁরা সেখানে বসবাস করছেন। গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। কিছুটা পথ হেঁটে গেলেই রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দোকান-বাজার। অথচ গ্রামের বাইরে পা রাখলেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে জমা রাখতে হচ্ছে সচিত্র পরিচয়পত্র।

যেমন, হাবাসপুরের বাসিন্দা বালিকা বিশ্বাস। তপ্ত দুপুরে আম গাছের নীচে বসে বিড়ির পাতায় লাল সুতো জড়াচ্ছিলেন।

এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে? সরকারি প্রকল্প থেকে কতটা উপকৃত হয়েছেন? প্রশ্ন করতেই তির্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট পাকা হয়েছে। আলো পেয়েছি। রেশনও পাই। কিন্তু সব কিছুই যেন না পাওয়ার মতো।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের আর পাঁচটা গ্রামের জীবন থেকে আমাদের জীবনযাত্রা অনেকটাই আলাদা। সন্ধের পর নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া গ্রামের বাইরে যাওয়া যায় না। আত্মীয় পরিজনদের রাতে এই গ্রামে প্রবেশ নিষেধ। সব সময়ে ভোটার বা আধার কার্ড বয়ে বেরাতে হয়।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ভোট কি দেওয়া এই কারণে?"

বিএসএফের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক বলেন, সীমান্তের নিয়ম অনুযায়ী এই সকল গ্রামীণ এলাকায় ১৪৪ ধারা সারা বছরই জারি থাকে। তাই তাঁরাও নিরুপায়। নিরাপত্তার স্বার্থেই পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখতে হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy