বুলবুলের তাণ্ডবলীলা। ফাইল চিত্র।
ঘোষণা করেছিলেন খোদ কৃষিমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, জমির রেকর্ড না থাকলেও ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দিয়েই বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা যাবে। কিন্তু সেই ঘোষণাই সার। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দিয়ে বুলবুলের ক্ষতিপূরণের আবেদন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকদের একাংশ।
গত মাসে বুলবুল ঝড়ে জেলার ৩,০১২টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত বলে ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে জেলার জন্য প্রায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই মত ক্ষতিপূরণের আবেদন পত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু করেছে কৃষ দফতর। আবেদনের জন্য কৃষকদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের প্রতিলিপি এবং জমির সাম্প্রতিকতম পর্চা জমা দিতে হচ্ছে। যাঁদের সাম্প্রতিক পর্চা নেই, তাঁদের পুরনো পর্চার সঙ্গে কম্পিউটার আইডি নম্বর সম্বলিত নথির প্রতিলিপি আবেদন পত্রের সাথে জমা দিতে হচ্ছে।
কিন্তু জেলার এমন অনেক কৃষক রয়েছেন, যাঁদের পৈতৃক সম্পত্তির কোনও পর্চা এখনও তৈরি হয়নি। এমন ক্ষেত্রে খড়গপুরে একটি সভা থেকে কয়েকদিন আগে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ওয়ারিশন সূত্রে প্রাপ্ত জমির মালিকেরা তাঁদের নিজের নামে জমির রেকর্ড না থাকলেও ওয়ারিশান সার্টিফিকেট দিয়েই বুলবুলের ফর্ম জমা করতে পারবেন।
মন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর অনেকেই ওয়ারিশন সার্টিফিকেট নিয়ে আবেদনপত্র জমা দিতে আসেন ব্লক কৃষি অফিসগুলিতে। অভিযোগ, তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে, ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে গেলে পর্চা লাগবেই। এ দিন কৃষি দফতরের কোলাঘাট ব্লক অফিসে এসেছিলেন চাপদা গ্রামের বাসিন্দা নব শাসমল। নব বলেন, ‘‘ওয়ারিশন সূত্রে ১৭ ডেসিমাল জায়গা পেয়েছি। কিন্তু তার রেকর্ড হয়নি। কৃষিমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট তুলে আবেদনপত্র জমা দিতে যাই। কিন্তু তা জমা নেওয়া হয়নি। পর্চা না থাকার জন্য আমি আবেদন করতে পারলাম না।’’
জেলা কৃষি দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, কৃষিমন্ত্রী যা বলেছেন, সে নিয়ে তাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। কৃষকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর আশিস বেরা বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও অর্ডার আমার এখনও পাইনি। আমাদের জেলায় প্রায় সাত লক্ষ চাষি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য সর্বপ্রথম যাতে ওই সাত লক্ষ কৃষক ক্ষতিপূরণের সুযোগ পান। পরে যদি রাজ্য থেকে কোনও নির্দেশ আসে, তাহলে আমরা অবশ্যই তা কার্যকর করব।’’
কৃষকদের সমস্যার বিষয় নিয়ে শুক্রবার কৃষক সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেয় কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ নায়ক বলেন, ‘‘মন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও কৃষকরা ওয়ারিশন সার্টিফিকেট নিয়ে আবেদনপত্র জমা দিতে পারছে না। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মন্ত্রীকে আবেদন করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy