নিজস্ব চিত্র
কোনও রাখঢাক নেই। প্রকাশ্য সভায় মাইক হাতে তৃণমূল নেতা জানিয়েই দিলেন— ভোটের দিন বিরোধীদের ঘর থেকে বেরোতে দেওয়া হবে না, সে দিন ময়দানে থাকবে শুধু তৃণমূল।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও রাজ্যের শাসক দলের নেতাকর্মীরা ২০১৮ সালের ‘বল্গাহীন সন্ত্রাস’ ফিরিয়ে আনতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। চাপড়া বাসস্ট্যান্ডে সভামঞ্চ থেকে যেন সেই ধারণাতেই সিলমোহর দিলেন তৃণমূলের চাপড়া ব্লক সভাপতি শুকদেব ব্রহ্ম। রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস-সহ জেলা তৃণমূলের বিধায়ক-নেতারা তখন মঞ্চে বসে। তৃণমূল অবশ্য দাবি করছে, আসলে বিরোধীদের নয়, তাদের অশান্তি পাকানোর চেষ্টাকেই ‘ঘরবন্দি’ করার কথা বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার চাপড়ায় সভা করে গিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শনিবার তার পাল্টা সভায় সিপিএমের রাজ্য নেতাকে ‘সার্কাস পার্টির জোকার’ বলে কটাক্ষ করে শুকদেব বলেন, “তৃণমূল ৩৬৪ দিন মানুষের পাশে থাকবে, আর আপনারা এক দিন ভোটের ময়দানে এসে চাপড়াকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন, এটা কিন্তু আমরা মানব না।” এর পরেই বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, “বিজেপি, সিপিএম-সহ সব দল শুনে রাখুন, ভোটের দিন তাদের কিন্তু আমরা ঘর থেকে বেরোতে দেব না। সে দিন শুধু ময়দানে থাকবে তৃণমূল, তৃণমূল আর তৃণমূল।” যা শুনে সভায় প্রবল হাততালি পড়ে, মঞ্চে বসা নেতাদেরও কাউকে-কাউকে হাততালি দিতে দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র মতে, "তৃণমূলের নেতারা যে ভাবে ভোট ‘শান্তিপূর্ণ হবে’ বলে আসছেন তাতেই স্পষ্ট যে আগে ভোট ‘অবাধ’ হয়নি। আগের পঞ্চায়েত ভোটের কায়দাতেই যে তাঁরা ভোট করতে চাইছেন তা বোঝা যাচ্ছে।” তাঁর দাবি, “কী ভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে, সেই পথ আমাদের জানা আছে। মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটেই ওঁরা তা হাড়ে-হাড়ে টের পাবেন।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের দাবি, "তৃণমূল নেতাদের এই ধরনের হুমকি নতুন নয়। আগে সিপিএম এ রকম হুমকি দিত, মানুষ ওদের ছুড়ে ফেলেছে। তৃণমূলও সে কথা মনে রাখুক।” সে দিন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসকে তাঁর ‘রাজনৈতিক গুরু’ বলে উল্লেখ করেছিলেন শুকদেব। রবিবার বারবার চেষ্টা করেও মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে শুকদেবের ব্যাখ্যা, “আমার বক্তব্য পুরোটা শুনলে বোঝা যাবে যে আমি হুমকি দিইনি। বিরোধীরা অশান্তি করলে আমরা তা ঠেকাব, সেটাই বুঝিয়েছি।” উজ্জ্বল ছাড়াও সেই মঞ্চে ছিলেন চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান, চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন, কৃষ্ণনগরের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সদস্য অসীম সাহা, কৃষ্ণনগর শহর তৃণমূল সভাপতি মলয় দত্ত প্রমুখ। এ দিন রুকবানুরও দাবি করেন, “ওখানে তো বারবার শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা বলা হয়েছে। এর আগে চাপড়ায় বিরোধীরা সন্ত্রাস করেছে। সেটা রুখতে চেষ্টা করব, উনি সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy