প্রায় ১৬ জন নেতা ব্লক কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। প্রতীকী চিত্র।
একের পর এক নেতা ব্লক কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে থাকায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। হাঁসখালি ১ ব্লক কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলের অন্দরের তীব্র ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিতে থাকে। অনেকেই প্রকাশ্যে ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকেন। এমনকি, ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তের বিক্ষুব্ধ নেতারা দীর্ঘ বৈঠকও করেন। তার পর শুরু হয় একের পর এক নেতৃত্বের কাছে ইস্তফা দেওয়া। সেই তালিকায় যেমন জেলা পরিষদের সদস্য রয়েছেন, তেমনই আছেন দলের ১৭ বছরের পুরনো ব্লক সভাপতিও। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে জেরবার।
৩ ফেব্রুয়ারি হাঁসখালি ১ ব্লক কমিটি ঘোষণা করে দল। সেই সঙ্গে অঞ্চল কমিটিগুলির সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এর পর প্রবল ভাবে সামনে আসতে থাকে। প্রথমেই দক্ষিণপাড়া ১ অঞ্চল সভাপতি ও অঞ্চলের যুব সংগঠনের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা শুরু হয়। এরই মধ্যে হাঁসখালিতে একটি লজে বৈঠকে বসেন এই ব্লকের বিরোধী গোষ্ঠীর বা বিক্ষুব্ধ নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সেখানে অনেকেই ব্লক কমিটিতে থাকবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬ জন নেতা ব্লক কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এঁদের অন্যতম জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ ওরফে বাবলু গুহ। তিনি বলেন, “দল ঠিকমতো চলছে না। কিছু অঞ্চল সভাপতিকে পরিবর্তন করার প্রয়োজন ছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আছে। অথচ, তাঁদেরই রেখে দেওয়া হল।দলকে আরও কঠিন পরিস্থির মধ্যে ফেলে দেওয়া হল। তারই প্রতিবাদে আমরা ইস্তফা দিচ্ছি।”
মন্টু ঘোষ ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত হাঁসখালি ব্লক সভাপতি। ২০২১ সালের শেষের দিকে তাঁকে ব্লক সভাপতি করা হয়। মাস ছ’য়েক আগে তাঁকে সরিয়ে দীনেশ চক্রবর্তীকে হাঁসখালি ১ ব্লক সভাপতি করা হয়। মন্টু ঘোষের কথায়, “এত দিন ব্লক সভাপতি ছিলাম। তারপর শুধু মাত্র ব্লক কমিটির সদস্য থাকাটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ইস্তফা দিতে বাধ্য হলাম।”
এই ভাবে গণ-ইস্তফায় অস্বস্তি পড়ে গিয়েছেন ব্লক থেকে জেলা নেতৃত্ব। দলের অনেকে বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটের সময় টিকিট না পেলে দলের বিক্ষুব্ধ অংশ কী ভূমিকা নেয় তার উপরেই অনেক কিছু নির্ভর করবে। যদিও ব্লক সভাপতি দীনেশ চক্রবর্তী বলছেন, “এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ ইস্তফা দেননি।” আর নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে মান-অভিমান হয়। আমরা সবাই এক জায়গাতেই আছি। দেখবেন, পঞ্চায়েত ভোটে সবাই একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy