সংখ্যালঘু ভোটে জোর নজর। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে নদিয়ার সংখ্যালঘু এলাকায় তৎপরতা বাড়াচ্ছে সিপিএম। বিশেষ করে সাগরদিঘিতে উপ-নির্বাচনে তৃণমূললকে হারিয়ে জোটপ্রার্থীর জয়ের পর তারা আরও বেশি উজ্জীবিত।
সিপিএমের দাবি, তাদের নানা কর্মসূচিতে ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে জেলার সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে বুথে বুথে মিছিল বা এরিয়া কমিটি-ভিত্তিক জনসভায় আগের চেয়ে নেক বেশি ভিড় হচ্ছে। ছেড়ে যাওয়া অনেক পুরনো মুখেরও ফের দেখা মিলতে শুরু করেছে।
নদিয়ার দক্ষিণ অংশে যেমন মতুয়া ও উদ্বাস্তুদের বাস, তেমনই উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। চাপড়া, নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জ, তেহট্টা ১ ও ২, করিমপুর ১ ও ২ ব্লকের অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগ্য নির্ধারিত হয় সংখ্যালঘু ভোটে।
চাপড়া ব্লকে বেতবেড়িয়া গ্রামে দীর্ঘ ন’বছর পর সম্প্রতি লালঝান্ডা উড়িয়ে মিছিল করেছে সিপিএম। নওশাদ সিদ্দিকীর মুক্তির দাবিতে নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত মিছিলেও যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল। সম্প্রতি তেহট্টে চাঁদেরঘাট সমবায় সমিতির নির্বাচনে সব আসনেই জয়ী হয়েছেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। কালীগঞ্জ ও নাকাশিপাড়ার মতো সংখ্যালঘু প্রভাবিত এলাকাগুলিতেও সিপিএমের মিটিং-মিছিলে ভিড় হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি কালীগঞ্জ ব্লক অফিসে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিতেও সংখ্যালঘু মুখের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। করিমপুর ১ ও ২ ব্লকের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সিপিএমের কর্মসূচিতেও ভিড় বাড়ছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। সম্প্রতি করিমপুর বাজারে সুজন চক্রবর্তীর জনসভাতেও সংখ্যালঘু মানুষের ভিড় আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি ছিল বলে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি।
প্রত্যাশিত ভাবেই নদিয়া উত্তরে বিশেষত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মিটিং-মিছিলের উপর বেশি জোর দিচ্ছে সিপিএম। সম্প্রতি চাপড়ায় কর্মিসভা করে গিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি যে দু’টি এলাকায় সভা করেছেন সেখানে সংখ্যালঘু মানুষের বাস কিছুটা কম হলেও আশপাশের এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। করিমপুর ১ ব্লকেও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। করিমপুরে জনসভা করে গিয়েছেন সুজনও। জেলার আর এক সংখ্যালঘু প্রধান এলাকা কালীগঞ্জ ব্লকেও তিনি দলের কর্মসূচিতে গিয়েছেন।
সিপিএমেরই একটা অংশের দাবি, দক্ষিণের তুলনায় উত্তর নদিয়াতেই তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তুলনায় বেশি। সেই কারণেই এই সব এলাকায় দলের রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে এসে সংখ্যালঘু বলয়ে আস্থা অর্জনের চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন হল, বামেরা কি তৃণমূলের হাত থেকে সংখ্যালঘু ভোট ছিনিয়ে নিতে পারে? বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটে যদি বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেস এবং আইএসএফের জোট হয়, তৃণমূলের পক্ষে সংখ্যালঘু ভোট অটুট রাখা সম্ভব হবে কি?
সরাসরি উত্তর এড়িয়ে সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “সব জায়গাতেই আমরা দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করছি। যেখানে যেখানে মানুষ এগিয়ে আসছে, সেই সমস্ত এলাকাতেই কর্মসূচি বাড়ানো হচ্ছে।” আর সংখ্যালঘু ভোট হাতছাড়া হওয়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “এ সব কষ্টকল্পনা। সিপিএমকে সংখ্যালঘুরা আর বিশ্বাস করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা উন্নয়ন তাঁদের তৃণমূলের সঙ্গেই রাখবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy