ভাঙচুর: এক অভিযুক্তের বাড়ি। মঙ্গলবার জয়পুরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল কর্মী দিবাকর সরকারকে গুলি করার ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃতের নাম সুমন মণ্ডল। আনাজ ব্যবসায়ী এই যুবক এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। পুলিশ জানায়, সোমবার এই সুমনের বাড়িতে বসেই মদ খাচ্ছিল মূল অভিযুক্তেরা। ওই বাড়ির সামনেই দিবাকরকে গুলি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার পরই পুলিশ সুমনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল। পরে দিবাকরের বাবা দিলীপ সরকারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার রানাঘাট আদালতে তোলা হলে তাকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া লিখিত অভিযোগে আরও সাত জনের নাম রয়েছে। তারা সকলেই এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। পুলিশ জানায়, ফেরার সাত অভিযুক্তের নাম সুবীর মল্লিক, সহদেব মল্লিক, রাজীব মণ্ডল, জয়দেব মল্লিক, রজত মল্লিক, সুমন রায় ও সুভাষ দাস। এর মধ্যে সহদেব রেলপুলিশের এবং সুমন রায় রেলের কর্মী। তবে যার বিরুদ্ধে দিবাকরকে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে, সেই দাগি অপরাধী সুবীর-সহ কাউকেই বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশ ধরতে পারেনি।
সোমবার রাতে হাঁসখালির জয়পুর গ্রামে লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন দিবাকরকে গুলি করা হয়েছিল। বিজেপির লোকজন এই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ তুলে রাতেই বিজেপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন তার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিজেপি।
প্রথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, দাগি সমাজবিরোধী সুবীর মল্লিক গুলি চালিয়েছিল। জয়পুর ছাড়াও কৃষ্ণনগরের ঘোড়াপট্টিতে তার বাড়ি আছে। নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আগে সে গ্রেফতারও হয়েছিল। ২০১১ সালে জয়পুর গ্রামে আর এক জনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় সে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। তার পর থেকে সে গ্রামে ঢুকতে পারত না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে কৃষ্ণগঞ্জের তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে সুবীর গ্রামে ঢোকে। তখন থেকে সে সক্রিয় ভাবেই তৃণমূল করত। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে সত্যজিৎ খুন হওয়ার পরে হাওয়া ঘুরতেই সে-ও আরও অনেকের সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। সে-ই গুলি ছুড়েছে বলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে শুয়ে দিবাকরও অভিযোগ করেছেন।
এ দিন সকালে গ্রামে গিয়ে আক্রান্ত বিজেপি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাঁর দাবি, “এই ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নয়। পুরোটাই তৃণমূলের নাটক।” তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি শশঙ্ক বিশ্বাস পাল্টা বলেন, “এলাকা দখল করতে বিজেপি যে খুনোখুনির রাজনীতি আমদানি করতে চাইছে, সেটা আবারও পরিষ্কার হয়ে গেল।’’
দিবাকরের উপরে হামলায় যদি বিজেপির লোকেরাই জড়িত, তারা কেন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বসে মদ খাচ্ছিল? গ্রামের তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী করণাকৃষ্ণ মজুমদারের দাবি, “সুমন আমাদের দলেরই কর্মী। গ্রামের সকলের সঙ্গেই ও মেলামেশা করত। সেই কারণেই বাকিরা তার বাড়িতে বসে মদ খেয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সে কিছুই জানত না বলে আমাদের ধারণা।”
পুলিশ জানায়, বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy