ইদের দিন মুর্শিদাবাদের ডোমকল গোধনপাড়া ও সাগরপাড়া এলাকার একাধিক রাস্তায় খাট ছুটিয়ে নজর কেড়েছিলেন নবাব শেখ। প্রেমিকার (এখন স্ত্রী) আবদার এবং ভাইরাল হওয়ার বাসনা থেকে জমানো পুঁজির প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করে এবং দীর্ঘ আড়াই বছরের পরিশ্রম দিয়ে তৈরি করেছিলেন এমন এক খাট, যাকে রাস্তায় দৌড় করানো যায়। কিন্তু আইনি প্যাঁচে বেকায়দায় ডোমকলের নবাব। ডোমকল থানার পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে ওই খাট-গাড়ি। যা নিয়ে অভিমানী নবাবের বক্তব্য, ‘‘শিল্পীসত্তা দিয়ে বিশেষ গাড়ি তৈরি করেছিলাম। ভেবেছিলাম, প্রশাসন পাশে থাকবে। বাংলার নাম উজ্জ্বল করতে চেয়েছিলাম। উল্টে কিছুই পেলাম না। গাড়িটাই বাজেয়াপ্ত করে নিল।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, নবাবের ভাইরাল হওয়া ‘গাড়ি’ গত ৫ এপ্রিল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এখন ডোমকল থানা চত্বরে পড়ে রয়েছে সেটি। ডোমকলের এসডিপিও শুভম বাজাজ বলেন, ‘‘মোটর ভেহিকল অ্যাক্টের নির্দিষ্ট ধারায় ‘চলন্ত খাট’ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই জিনিসটির কোনও বিমাও করা নেই। এখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সেটার দায় কে নেবে? তাই ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, নবাব জানাচ্ছেন, তাঁর পুলকারের ব্যবসা ছিল। শখের বিছানা-গাড়ি তৈরি করতে নিজের সেই ব্যবসা সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখেছিলেন। ধারদেনা করে টাকা নিয়ে বানিয়েছিলেন চলন্ত খাট। কিন্তু এখন পুরোটাই জলে। ঋণ মেটানোর জন্য সোমবার থেকে আবার গাড়ি করে স্কুলপড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন নবাব। তিনি বলেন, ‘‘২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলন্ত খাট বানানোর কাজ শুরু করেছিলাম। এ বার ইদের দিন রাস্তায় নামিয়েছিলাম।’’ কিন্তু এর মধ্যে বাংলাদেশের কয়েক জন যুবক চলন্ত খাটের ভিডিয়ো দেখে কপিরাইট নিয়ে অভিযোগ করেছেন। সব মিলিয়ে সমস্যায় ডোমকল পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নবাব। ২৭ বছরের যুবক আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘‘বাবা-মা ও বৌ বলেছে ওই বিছানা-গাড়ির কথা ভুলে গিয়ে নিজের গাড়ি চালিয়ে আয় করার কথা। সেটাই করব।’’