Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

পুলিশ আসার আগেই পাখি উড়ে যায়

মাস কয়েক আগে এক দিন রাতে হরিণঘাটার পুলিশ আচমকা মহাদেবপুরে মেরুর বাড়িতে হানা দিয়ে গাঁজা-সহ তাকে গ্রেফতার করে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০২:০০
Share: Save:

গাঁজা মাফিয়াদের দাপটে এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ তিতিবিরক্ত। অল্পবয়সীদের মধ্যে তারা নেশার অভ্যাস ছড়িয়ে দেবে এমন আশঙ্কাতেও ভুগছেন তাঁরা। কয়েক জন প্রতিবাদ করারও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাফিয়াদের থেকে হাড়হিম করা হুমকি খেয়ে তাঁরা চুপ করে গিয়েছেন।

তবে গত দু-তিন বছরে পরিস্থিতি যেন একটু বদলেছে। পুলিশ কিছুটা হলেও সক্রিয় হয়েছে। প্রথমেই তারা ভৈরবীর বাড়ি হানা দিয়ে প্রচুর গাঁজা-সহ গ্রেফতার করে। ধরা পড়ে তার ছেলেও। এখনও তারা জেলে। কিন্তু এতে সামগ্রিক পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। ব্যবসা চালাচ্ছে অন্য মাফিয়ারা। রমরমিয়ে বেড়েছে মেরু ও সুজনের মতো মাফিয়ার ব্যবসা। দু’জনের মধ্যে শুরু হয় ঠাণ্ডা লড়াই। সুজন ব্যবসায় মেরুকে টপকে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। হরিণঘাটা থানার পলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় তার কাছে বেশি গাঁজা না-থাকায় বেশ কিছু দিন পরেই সে জামিনে মুক্ত হয়ে যায়। পরে মুর্শিদাবাদেও সে আরও এক বার ধরা পড়ে। সে বারও জামিন পেয়ে যায় অল্প দিনে।

মাস কয়েক আগে এক দিন রাতে হরিণঘাটার পুলিশ আচমকা মহাদেবপুরে মেরুর বাড়িতে হানা দিয়ে গাঁজা-সহ তাকে গ্রেফতার করে। সেই রাতেই পুলিশ সুজনের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছিল। কিন্ত তাকে পাওয়া যায়নি, উদ্ধার হয়নি গাঁজাও। পুলিশের একটা অংশের বিশ্বাস, থানার কোনও কোনও পুলিশ কর্মী ওই মাফিয়াজের সঙ্গে জড়িত। তারা নিয়মিত টাকা পান এবং পুলিশি হানার কথা তাঁরাই আগেভাগে জানিয়ে দুষ্কৃতীদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন। মেরু বেশ কয়েক মাস জেলে থাকার পরে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এবং আবারও পুরোপুরি গাঁজার ব্যবসা শুরু করেছে।

কিন্তু এরই মধ্যে কিছুটা হলেও গাঁজার ব্যবসার ভর-পরিবর্তন হয়েছে। মেরুর জেলে থাকার সুযোগ নিয়ে সুজন এই ব্যবসার উপরে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ তৈরি করেছে। এমনকি মেরুর সঙ্গে প্রায় সমানে সমানে টক্কর দেওয়া শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশেরই একটা অংশ।

স্থানীয়দের একটা অংশের দাবি, বরাবরই পুলিশের একটা অংশের আশীর্বাদের হাত থাকে মাফিয়াদের উপরে। অনেকটা হিন্দি সিনেমার কায়দায় তাই পুলিশি হানার আগেই পাখি উড়ে যায়। সবাই সবকিছু খোলাখুলি জানলেও গাঁজার ব্যবসা কখনও পুরোপুরি বন্ধ হয় না। চাপে পড়লে কিছুদিন একটু চুপচাপ থেকে ফের ফুলেফেঁপে ওঠে। ব্যবসায়ীরা জামিন পেয়ে যায়। আসলে কোটি কোটি কাঁচা টাকা এই ব্যবসায় উড়ছে, যা দিয়ে অনেকেরই মুখ বন্ধ করে দেওয়া যায়। বিভিন্ন যুগে শাসক দল, পুলিশ ও প্রশাসনের একটি অংশকে মাফিয়ারা টাকা দিয়ে কিনে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকাংশ।

রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভি এস আর অনন্তনাগের কথায়, “আমরা নিয়মিত সমস্ত রকমের বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। এ ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালনো হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Cannabis Krishnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy