প্রতীকী ছবি।
নওদা বিধানসভা এলাকায় হালফিলের আলোচনায় তৃমূলের একটা চলতি নাম জুড়ে গিয়েছে ‘তিন মূল’! সৌজন্য রাজ্যের শাকদলের বিরামহীন ত্রিমুখী কোন্দল। এলাকায় তৃণমূল এখন কার্যত তিন টুকরো। তিন নেতার আকচাআকচির জেরে সেই ত্রি-ভঙ্গ তৃণমূলের এমনই নাম দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। আর এই তিন টুকরো অবস্থায় থাকা তৃণমূলের ফয়দা লুটতে মাঠে নেমেছে কংগ্রেস।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডলের রাজনীতির ভিত্তিভূমি এই নওদা ব্লক। অথচ সেখানে আবু তাহের বনাম মোশারফ চর্চা পাড়ার চায়ের দোকান থেকে গ্রামীণ মাচায়, সর্বত্র। এই কোঁদলেই অক্সিজেন পাচ্ছে কংগ্রেস, এমনই অনুমান সাধারনের। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত নওদা।
গত বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে এখান থেকেই জয়ী হয়ে পরে দল বদলেছিলেন আবু তাহের। পরে তিনি তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হয়েছেন। মোশারফ ওরফে মধুও এখান থেকেই পঞ্চায়েতে জয়ী হয়ে ক্রমে কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। পরে তিনি নাম লেখান তৃণমূলে। বর্তমান বিধায়ক সাহিনা মমতাজও একদা তাহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। তৃণমূলের টিকিটে বিধানসভায় গেলেও তিনিও এই ব্লকে তৃতীয় ধারা।
আবু বনাম মধু— এই দুই নেতার বিবাদ নতুন নয়। সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন মধু। তাঁর শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠতার জেরে মাস খানেক আগে তৃণমূল তাঁকে প্রায় খরচের খাতায় ফেলে দিয়েছিল। তাঁর ‘দল বিরোধীতা’র জন্য আবু তাহের প্রকাশ্যেই মধুকে শাসিয়েছেন, ‘দল তাঁর (মধু) কার্যকলাপ ভাল চোখে দেখছে না। প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
মধুর অবশ্য তাতে কোনও হেলদোল হচ্ছে বলে আপাত ভাবে মনে হচ্ছে না। কংগ্রেসের একাংশের দাবি, ইতিমধ্যেই তিনি হাত চিহ্নের দিকেও ঝুঁকেছেন। নিজের অনুগামীদের নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। দুই নেতার এই তুমুল ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে কিঞ্চিৎ পিছিয়ে পড়লেও দলের কোন্দলকে সামনে এনে দিয়েছেন বিধায়র সাহিনা। তিনি প্রকাশ্যেই নিজেকে ‘কোণঠাসা’ বলে দাবি করে জানান, তাঁর কাজে বাধা দিচ্ছেন এলাকার নেতারা।
পরোক্ষে তাঁর অভিযোগের আঙুল আবু তাহেরের দিকে। একদা ঘনিষ্ঠ আবুর সঙ্গে যে তাঁর আর বনছে না জেলা নেতাদের অনেকেই তা মেনে নিয়েছেন। পাশাপাশি মধুর সঙ্গে জেলা সভাপতির মতোই সাহিনার সম্পর্কও আদায় কাঁচকলায়।
এই তিনকোনা লড়াইয়ের সুযোগ বুঝে কংগ্রেস ঘোষণা করেছে নওদা ফের কংগ্রেসের কাছেই ফিরবে। এই কোন্দলের জেরে তৃণমূলের মেজ নেতাদের অনেকেই এখন পা বাড়িয়েছেন কংগ্রেসের দিকে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেসে ফিরেছেন ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি মতিউর রহমান।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আবু শুধু আওড়ে চলেছেন, ‘‘আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। দলনেত্রী সকলকে একসাথে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এখন সে দিকেই হাঁটছি।’’ প্রশ্ন শুধু, হাঁটছেন তো বটে কিন্তু পাশে সকলে আছেন তো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy