প্রতীকী ছবি
নোটবন্দির ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ঘাড়ে এসে পড়ে জিএসটি। যার জেরে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়। তার মধ্যেই আজ শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট। সেই বাজেটে নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের প্রত্যাশা অনেক। দীর্ঘদিন ধরে থমকে থাকা একাধিক রেলপ্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ, জিএসটির হার কমানো, আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ানো, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি উঠছে। তবে প্রত্যাশা কতটা পূরণ হবে, সে প্রশ্ন কাটছে না।
নসিপুর রেল সেতু
মুর্শিদাবাদ স্টেশনের সঙ্গে আজিমগঞ্জের সংযুক্তকরণের দাবি দীর্ঘ দিনের। অনেক আগে রেল সেই প্রকল্পের অনুমোদনও দেয়। সেই মতো দু’টি স্টেশনের মাঝে নসিপুরে ভাগীরথীর উপরে ২০০৪ সালে রেলসেতুর শিলান্যাস হয়। তার কাজ অনেক আগেই শেষ হলেও এখনও জমি জটে আটকে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার এই রেলপথের কাজ। মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক এআর খান বলছেন, ‘‘এই রেলপথ চালু হলে উত্তরবঙ্গ, দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দূরত্ব কমে যাবে, রেলের আয় বাড়বে। আমরা চাই কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে আজিমগঞ্জ-নসিপুর রেলসেতু প্রকল্পের কাজ শেষের বিষয়ে উদ্যোগী হোক।’’
চৌরিগাছা-সাঁইথিয়া ভায়া কান্দি রেলপথ
অনেক আগেই এই রেলপথের অনুমোদন দিয়েছে রেল। জমি অধিগ্রহণের জন্য চৌরিগাছা থেকে রাজারামপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সমীক্ষার কাজও হয়েছে। কিন্তু এখনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে প্রকল্পের কাজ থমকে। কান্দি রেলওয়ে সংযুক্তকরণ কমিটির কর্মকর্তারা সম্প্রতি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে এই রেলপথের বিষয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত কর বলছেন, ‘‘এই প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রেলপথের দাবি দীর্ঘ দিনের। অনুমোদনও দিয়েছে রেল। কিন্তু টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় কাজ শুরু হয়নি। শনিবারের বাজেটে সরকার এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করুক।’’
কৃষ্ণনগর-বহরমপুর ভায়া করিমপুর রেলপথ
দীর্ঘ দিন থেকে এই রেলপথের দাবি। স্বাধীনতার আগে থেকে রেলপথ করার জন্য নানা সমীক্ষাও হয়। স্বাধীনতার পরে প্রকল্পের অনুমোদন দিলেও কোনও কাজ হয়নি। ২০০৯-১০ সালে তৎকালীন রেল বাজেটে কৃষ্ণনগর বহরমপুর ভায়া চাপড়া-করিমপুর ১১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের জন্য ৯৩২ কোটি টাকা ব্যায় ধার্য্য করা হয়। কিন্তু প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি দৌলতাবাদের বালিরঘাটে সেতুর রেলিং ভেঙে ভাণ্ডারদহ বিলে একটি বাস পড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। তার পরে এই রেলপথের দাবি আরও জোরাল হয়। কিন্তু বাজেটের পর বাজেট পার হয়ে যায়, প্রকল্পের কাজ হয় না। ‘করিমপুর ওয়ান্টস রেলওয়ে’— নামে সংগঠন গড়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা এই রেলপথের দাবি জানিয়ে আসছেন। সংগঠনের আহ্বায়ক দুর্বাদল দত্ত বলছেন, ‘‘আমরা চাই শনিবারের বাজেটে কৃষ্ণনগর-বহরমপুর ভায়া করিমপুর রেলপথের জন্য টাকা বরাদ্দ করুক।’’
চেম্বার অব কমার্সের দাবি
ব্যবসায়ী থেকে ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোগীদের দাবি, ২০১৬ সালে নোটবন্দির জেরে ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়েছিল। তার উপরে জিএসটির ধাক্কায় বেসামাল অবস্থা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে জিএসটির হার কমানোর প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রক্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘নোটবন্দি ও জিএসটির ধাক্কায় ব্যবসায় খুব মন্দা চলছে। তাই জিএসটির হার কমালে সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলের উপকার হবে। এ ছাড়া আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়াতে হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোগীদের আগে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিত সরকার। এখন তা নেমে ২০-৩০ শতাংশ পৌঁছিয়েছে। আমরা চাই সরকার ক্ষুদ্র শিল্পে ভর্তুকি বাড়াক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy