—প্রতীকী চিত্র।
দলের নেতার ভাটায় বসেই প্রথম বার তৃণমূল কর্মী মোসলেম শেখকে খুনের ছক কষা হয়েছিল। ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতেও দু’বার বসা হয়েছিল খুনের সামগ্রিক পরিকল্পনা করার জন্য। পাশাপাশি, গ্রামের এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর বাড়িতেও এক বার বৈঠকে বসা হয় বলে জেরার মুখে জানিয়েছে ওই খুনের ঘটনার ধৃতেরা, দাবি তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের। ওই নেতা ও সেনাকর্মী এখনও ধরা না পড়লেও তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। মোসলেম খুনের ওই দুই চক্রান্তকারীই খুনের পর থেকে এলাকাছাড়া রয়েছে।
অন্য দিকে, সোমবার মোসলেম খুনে অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। গোটা ঘটনার পুনর্নিমাণ করে দেখায় তারা। সেই সঙ্গে ধৃতদের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়, পাটখেতের ভিতর থেকে ওই খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও এ দিন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দু’দিন পরে, ৬ জুন দুপুরে চাপড়ার দৈয়েরবাজার এলাকায় একটি মাঠের ভিতরে মদের আসর বসিয়ে, সেখানেই মাথায় গুলি করে খুন করা হয় হাঁটরার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী মোসলেম শেখকে। বিধায়ক রুকবানুর রহমানের বিরোধী বলে পরিচিত জেবের শেখের অনুগামী বলে পরিচিত এই মোসলেম শেখ। জেবের আবার সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। লোকসভায় মহুয়া জিতে যাওয়ার পরে নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠে মোসলেম শেখ। তার বিরুদ্ধে খুন ও একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মহুয়া মৈত্র জিতে যাওয়ার পর এলাকায় আবার দাপট শুরু হয় মোসলেমের। সে বিরোধী গোষ্ঠীর কাউকে খুন করতে পারে, এই ভয় থেকেই মোসলেম শেখকে আগে খুন করার পরিকল্পনা কষে ফেলে দলের বিরোধী গোষ্ঠীর দুষ্কৃতীরা। জানা গিয়েছে, এলাকায় ওই গোষ্ঠীর লোকেদের সঙ্গে নানা কারণে দীর্ঘ দিন ধরেই শত্রুতা চলছিল মোসলেমের।
পুলিশ জানিয়েছে, জেলে বসেই এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে আলাপ হয় মোসলেম-খুনের অন্যতম এক অভিযুক্তের। জেলের ভিতরে বসেই ওই দুষ্কৃতী পেশাদার খুনি জোগাড় করে দেবে বলে কথা দিয়েছিল। সেই মতো জেলের বাইরে বেরিয়ে এসে দু’জন পেশাদার খুনির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেয় মোসলেম-খুনে অভিযুক্তকে। তদন্তে জানা গিয়েছে, ২১ এপ্রিল বাগমারা এলাকায় ওই খুনের ঘটনার অন্যতম চক্রান্তকারী তৃণমূল নেতার ইটভাটায় বসে প্রথম মোসলেমকে খুনের ছক কষা হয়। পুলিশের দাবি, পর দিন দুই পেশাদার খুনি হাঁটরার কাছে বড় আন্দুলিয়া বাজারে একটি মিষ্টির দোকান ছানা দেওয়ার চুক্তি করে। তার পর মোসলেমের লেবুর খেতে গিয়ে তার সঙ্গে আলাপ করে। লেবু বেচাকেনার কথা বলে তারা ক্রমশ মোসলেমের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে।
৬ জুন কৃষ্ণনগর আদালতে মামলায় হাজিরার দিন ছিল মোসলেম শেখের। তার সঙ্গে ওই দুই পেশাদার খুনিও আদালতে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোসলেমকে দৈয়েরবাজারের বাস থেকে নামায়। সেখানে মদ কিনে সকলে মিলে মাঠের ভিতরে আসর বসায়। সেখানে টুবাই ঘোষ মোসলেমকে মাটিতে চেপে ধরে আর উজ্জ্বল ঘোষ নাইন এমএম পিস্তল থেকে তার মাথায় গুলি করে বলে পুলিশের দাবি। তদন্তে জানা গিয়েছে, দুটো গুলি পড়ে যায়। একটা গুলি মোসলেমের মাথায় লাগে আর দুটো গুলি পিস্তলের চেম্বারের ভিতরেই থেকে যায়। সেই অবস্থায় মোসলেমকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার পথে মাঠের ভিতরে একটি পাটখেতের ভিতরে পিস্তলটি ফেলে যায় ওই দুই পেশাদার খুনি। খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমন সব তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ, দাবি আধিকারিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy