মৃতদেহ নিয়ে তেহট্টের হাউলিয়া পার্ক মোড়ে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
মুক্তিপণের দাবি পূরণ না করায় গলার নলি কেটে খুন করা হল এক অপহৃত যুবককে। মৃতের নাম সৌরভ কীর্তনীয়া (২২)। বাড়ি তেহট্ট থানার কড়ুইগাছি রথতলা পাড়ায়।
শুক্রবার গভীর রাতে ধুবুলিয়ায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি লজ থেকে সৌরভের দেহ মেলে। এর পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার-পরিজন। শনিবার তাঁরা শক্তিনগর হাসপাতাল ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ নিয়ে তেহট্টের হাউলিয়া পার্ক মোড়ে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন।
পরিবারের দাবি, পুলিশকে প্রথম থেকেই সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের গাফিলতিতে ছেলেটি খুন হল। পুলিশে আস্থা না থাকায় সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে অবরোধ চলে। পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে। পুলিশ জানায়, সৌরভের আত্মীয় ধুবুলিয়ার বাসিন্দা আকাশ হালদার, তার মা ঝর্না হালদার ও অজয় বিশ্বাস নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে লজের মালিককেও। পুলিশের দাবি, ধৃত আকাশ জেরায় অপরাধ কবুল করেছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ, বুধবার ফোন সারাতে গ্রাম থেকে কৃষ্ণনগরে যান সৌরভ। এর পরে আর ফেরেননি। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি। তাঁর কাকা জগবন্ধু কীর্তনীয়া বলেন, “বুধবার সন্ধ্যাতেই সৌরভের ফোন থেকে বাড়িতে ফোন আসে। ছেলেকে বাঁচাতে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।”
ওই রাতেই সৌরভের পরিবারের তরফে তেহট্ট থানায় সব জানিয়ে অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। বাড়ির লোকজন জানান, এর পরে একাধিক বার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে। শুক্রবার থেকে সেই ফোন আসা বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার সকালে তাঁরা মৃত্যুসংবাদ পান। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সৌরভের ফোনের টাওয়ার লোকেশন জেনেই বটতলার একটি লজে হানা দেয় ধুবুলিয়া থানার পুলিশ। সেখানে শৌচাগারে সৌরভের দেহ মেলে। মুখ বেঁধে মৃত্যু নিশ্চিত করতেইগলার নলি কাটা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতাই কলেজ থেকে স্নাতক সৌরভের বাড়িতে বাবা-মা, কাকা-কাকিমা নিয়ে বড় পরিবার। বাড়িতে ধান ভাঙার কল রয়েছে সৌরভের বাবার। আছে কিছু জমিজমাও। বাবা শ্যামলেন্দু কীর্তনীয়া বলেন, “পুলিশ ঠিক সময়ে পদক্ষেপ করতে হয়তো আমার ছেলের জীবনটা যেত না।” কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “অভিযোগ পেয়েই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল। পরিকল্পিত ভাবেই এই কাজ করেছে অভিযুক্তেরা। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।” নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy