গরু নিয়ে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র
মাঝ নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে গরু। তার শিঙে বাঁধা মোবাইল সাইলেন্ট করা রয়েছে। কিন্তু ফোন করলে আলো জ্বলছে। তাই দেখে নদীর পাড় থেকেই পাচারকারী বুঝে নিচ্ছে, গরু কোথায়। ও পাড়ে পৌঁছনোর পরে ক্রেতাও বুঝে নিচ্ছে, কোন গরুটা তার। কারণ তার মোবাইলে তত ক্ষণে তার জন্য পাঠানো গরুর শিঙে বাঁধা মোবাইলের নম্বর চলে এসেছে। অবাক করা এই কৌশলেই সীমান্তে নতুন করে শুরু হয়েছে গরু পাচার।
বুধবার রাতে বিএসএফ জওয়ানেরা শমসেরগঞ্জের নিমতিতার কাছে দুই পাচারকারী সহ ৮টি গরুকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে মিলেছে একটি কার্তুজ সহ ১২ বোরের রাইফেলও। ধৃতদের মধ্যে একজন আনোয়ার শেখ। বিএসএফ জানিয়েছে, তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী দেশের শিবগঞ্জের সাহাপাড়ায়। অন্যজন শমসেরগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামের খালেক শেখ। বুধবার শেষ রাতে নিমতিতা থেকে ধুলিয়ানের মধ্যে এই পাচারের ঘটনা সামনে আসে।
এ দিন বিএসএফের নজরে আসে নিমতিতার পরে মাঝ গঙ্গা দিয়ে গরু যাচ্ছে। স্পিডবোট নিয়ে তারা তাড়া করতেই ধরা পড়ে যায় পাচারকারী আনোয়ার। এরপরই বিএসএফের কাছে খবর আসে শমসেরগঞ্জের বাসুদেবপুরে পাচারকারীরা জড়ো হয়েছে গরু নিয়ে। বিএসএফ সেখানে পৌঁছতেই অন্যরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যায় খালেক, ৪টি পাচারের গরু সহ। সেখানেই মেলে ১২ বোরের একটি লোডেড বন্দুক।
বিএসএফ জানায়, আগে পাচারের গরুর পিছনে রাখালেরা নদী সাঁতরে যেত। কিন্তু এখন ভরা বর্ষায় পাচারকারীরা আর সঙ্গে যাচ্ছে না। গরু ভাসিয়ে দেওয়ার সময় তার শিংয়ের সঙ্গে পলিথিনে মুড়ে একটি সস্তার মোবাইল শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। গঙ্গার পাড় দিয়ে যাচ্ছে রাখালেরা। মাঝে মধ্যে গরুর শিংয়ে বাঁধা মোবাইলের সিমে ফোন করে দেখে নিচ্ছে গরুর অবস্থান। সাইলেন্ট মুডে থাকছে ফোন। ফলে শব্দ হওয়ারও সুযোগ নেই। গরুর নম্বরে ফোন করলেই মাঝ গঙ্গায় অন্ধকারে জ্বলে উঠছে ফোনের আলো।
বিএসএফ দাবি করেছে, ধৃতেরা জানিয়েছে, একজোড়া গরুর জন্য তাদের পাওয়ার কথা ছিল ৩০ হাজার টাকা করে। ধুলিয়ানের এক ব্যক্তি গরু প্রতি ৫০০ টাকা করে নিয়েছিল মোবাইলগুলি গরুর শিঙে ঠিক করে বেঁধে দেওয়ার জন্য।
৭৮ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডিং অফিসার ভিকে সিংহ বলেন, ‘‘প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও পাচারকারীদের নিত্য নতুন কৌশল ধরে ফেলে যে ভাবে পাচার রোখা হচ্ছে, তাতে পাচার কমার কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy