ফাইল চিত্র।
বছর কয়েক থেকে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে ক্রমে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজও কমছিল। যার জেরে ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তে শুরু করেছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত একশো দিনের কাজের প্রকল্পের লেবার বাজেটের অনুমোদন না মেলায় নতুন করে কাজই শুরু করতে পারেনি মুর্শিদাবাদ জেলা। যার জেরে জেলার শ্রমিক-কৃষি শ্রমিকদের ঘরবাড়ি ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছে।
হরিহরপাড়ার শ্রীপুরের বাসিন্দা সফিকুল বিশ্বাস বলছেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর মাত্র ১৪ দিন কাজ পেয়েছিলাম। এ বছর এখনও একদিনও কাজ পাইনি। ঘরে বসে তো সংসার চলবে না। তাই কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে যাব।’’ ডোমকলের সিরাজ মণ্ডল বলছেন, ‘‘এক সময় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ যথেষ্ট পেতাম। সেই সঙ্গে অন্যের জমিতে খেটে বাড়ির কাছে রুজিরুটির উপায় খুঁজে পেতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে একশো দিনের কাজে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। তার উপরে এ বছর কাজই শুরু হল না। তাই আমাদের কাছে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ একমাত্র ভরসা।’’ সফিকুল বা সিরাজ একা নয়, বাড়ির কাছে কাজ না পেয়ে জেলার বহু লোককে ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজে পাড়ি দিতে হয়।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস বলছেন, ‘‘এমনিতেই জেলার শ্রমজীবী মানুষের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার উপরে কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আমাদের টাকা দিচ্ছে না। যার জেরে গ্রামের গরিব লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মানুষ যদি ঠিক মতো কাজ পেতেন তবে তাঁদের আর ভিন্ রাজ্যে দিন মজুরি করতে যেতে হত না। এ রাজ্যে কাজে না পেয়ে বহু মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে যান।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের হাত ধরে একশো দিনের কাজের প্রকল্প এসেছিল। তার সুফল পেয়েছিলেন দেশের মানুষ। আর সেই প্রকল্পের ধারা বজায় রাখার দায়িত্ব বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পের জেরে গ্রামের মানুষ কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু কাজ না পেলে পরিযায়ী হয়ে যাবেন ওঁরা। প্রকল্পের অনুমোদন না পেলে কাজ দেব কী করে? আমাদের হাত-পা তো বাঁধা!’’ পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ঠিক কতটা তার হিসেব শ্রম দফতর বা প্রশাসনের কাছে নেই। তবে ২০১৯ সালের ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ভিন-রাজ্যে কর্মরত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেছিল। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জেলা থেকে ভিন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিক-ভোটারের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লক্ষ ১৪ হাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy