Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
school

ছুটি কাটিয়ে স্কুল খুললেও করানো গেল না ক্লাস

জেলার অন্যতম বড় মাদ্রাসা চাপড়ার ইসলামগঞ্জ হাই মাদ্রাসা। সেখানকার প্রায় তিন হাজার পড়ুয়ার আপাতত আরও কয়েক দিন স্কুলে যাওয়ার উপায় নেই।

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ০৭:০৩
Share: Save:

ভোট মিটেছে কবেই। ভোটের ফল প্রকাশের পর নয়াদিল্লিতে নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গঠনের কাজও সারা। অথচ, জেলায় ভোট করাতে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী এখনও রয়ে গিয়েছে নদিয়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাই দীর্ঘ ৫০ দিনের গরমের ছুটির পর সোমবার স্কুল খুললেও প্রথম দিনেই স্কুলে যাওয়া হল না ওই সব স্কুলের পড়ুয়ার। ইসলামগঞ্জ হাই মাদ্রাসা, হাঁসখালি সমবায় বিদ্যাপীঠ, মাঝদিয়া রেলবাজার হাইস্কুল, তেহট্ট পলিটেকনিক কলেজ প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা রয়েছেন। তাই সোমবারেও পঠনপাঠন শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ। কোথাও আবার বাহিনী চলে গেলেও ভোট-পরবর্তী সময়ে স্কুলের যে হাল হয়েছে, তাতে এখনই পড়ুয়াদের আসার উপযুক্ত করা সম্ভব হয়নি স্কুলটিকে।

জেলার অন্যতম বড় মাদ্রাসা চাপড়ার ইসলামগঞ্জ হাই মাদ্রাসা। সেখানকার প্রায় তিন হাজার পড়ুয়ার আপাতত আরও কয়েক দিন স্কুলে যাওয়ার উপায় নেই। কেননা, বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ঘরই এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দখলে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান মিজারুল শেখ বলেন, “ভোটের সময়ে কিছু দিন বাহিনী ছিল স্কুলে। ভোট মিটলে বাহিনী চলে যায়। ফের গণনার আগে গত ৩ জুন স্কুলে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ান আসে। ফলে, সোমবার স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করাতে পারিনি।” বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক-সহ বিভিন্ন জায়গায় লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানালেন, ওই মাদ্রাসার মাঠেই এলাকার ১০-১২টি গ্রামের মানুষ ইদের নমাজ পড়েন। আগামী ১৭ জুন ইদ। সুতরাং, সে দিক থেকেই দ্রুত বাহিনী সরানো দরকার। তাঁর দাবি, ‘‘স্থানীয় পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দ্রুত বাহিনী সরানো হবে।”

হাঁসখালির সমবায় বিদ্যাপীঠ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গিয়েছে শনিবার রাতে। কিন্তু রবিবার স্কুলে ঢুকে বিদ্যালয়ের হাল দেখে চমকে ওঠেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সারা স্কুল জুড়ে ছড়ানো মদের বোতল, গুটকা-সিগারেট, বিভিন্ন খাবারের প্যাকেট। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সায়র দেবনাথ বলেন, “রবিবার সাত জন এবং সোমবার ছয় জন শ্রমিক লাগিয়েও স্কুলের হাল ফেরাতে পারিনি। স্কুলের একটা ঘরে অনেক চেয়ার-বেঞ্চ রাখা ছিল। সেখান থেকে বের করে সারা স্কুল জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সে সব ছড়ানো। সবটা ঠিক করতে সময় লাগবে। তবে মঙ্গলবার থেকে ক্লাস শুরু করতে পারব, আশা করছি।”

একই ভাবে মাজদিয়া রেল বাজার হাইস্কুলের পড়ুয়ারাও সোমবার স্কুলে ঢুকতে পারেনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রতন মণ্ডল বলেন, “সোমবার আমরা পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করতে পারিনি। এ দিন সকালেই স্কুল থেকে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর পরে স্কুল পরিষ্কার-পরিছন্ন করে ক্লাসঘর গোছগাছ করে ক্লাস করানো সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার থেকে পড়ুয়ারা স্কুলে আসবে।”

এই প্রসঙ্গে নদিয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল বলেন, “যে দু-একটি স্কুলে বাহিনী ছিল, সেখান থেকে আজ-কালের মধ্যে তাদের চলে যাওয়ার কথা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও জানানো হয়েছে।”

তবে ভোট মেটার এত দিন পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুলে থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ নদিয়ার তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ সিংহ। তিনি বলেন, “আমাদের দাবি দ্রুত স্কুলগুলি কেন্দ্রীয় বাহিনী-মুক্ত করতে হবে। একেই এত দিন গরমের জন্য স্কুল ছুটি ছিল। পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে। এর পর যদি কেন্দ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এখনও স্কুলে-স্কুলে বাহিনী রেখে দেয়, তা হলে পড়ুয়াদের আরও ক্ষতি হবে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।”

এই প্রেক্ষিতে বিজেপির নদিয়া জেলা শিক্ষক সংগঠনের আহ্বায়ক অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নদিয়া জেলায় সে ভাবে ভোট-পরবর্তী হিংসার খবর নেই। তাই আমরাও চাইছি, স্কুলগুলিতে দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক।”

অন্য বিষয়গুলি:

school Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy