আত্মঘাতী মা এবং ছেলে। প্রতীকী চিত্র।
ঘরে ঝুলছে মা এবং ছেলের দেহ। বাড়ি ফিরে গৃহকর্তা দেখলেন সেই দৃশ্য। ছেলের পায়ে লেখা সুইসাইড নোট! মঙ্গলবার নদিয়ার কল্যাণীর ঘটনা। পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণীর বি ব্লকের বাসিন্দা বিশ্বনাথ মণ্ডল (৭২) একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। বেশ কয়েক বছর আগেই অবসর নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে উদ্ধার হয় বিশ্বনাথের স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল ( ৬২) এবং ছেলে শুভদীপ মণ্ডল (৩৭)-এর ঝুলন্ত দেহ। বিশ্বনাথের দাবি, তিনি বাড়িতে ছিলেন না সেই সময়। বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রী এবং পুত্রের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তাঁদের নিয়ে যান কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথই এক মাত্র রোজগেরে ছিলেন পরিবারের। তাঁর অবসরকালীন ভাতায় চলত সংসার। চাকরি পাননি শুভদীপ। সম্প্রতি কোলন ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। তাঁর চিকিৎসায় খরচ হয়ে যায় জমানো টাকা। বুধবার তাঁদের ভেলোর যাওয়ার কথা ছিল চিকিৎসার জন্য। ২১ সেপ্টেম্বর সেখানকার ক্যানসার বিশেষজ্ঞকে দেখানোর কথাও ছিল বিশ্বনাথের। কিন্তু তার আগেই ঘটল এই মর্মান্তিক ঘটনা। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘ছেলে এবং আমার স্ত্রী আমাকে বলছিল যে, ‘তুমি না থাকলে আমরা কী করে বাঁচব?’ আমি ওদের বুঝিয়েছিলাম, ‘আমার যা বয়স তাতে স্বাভাবিক ভাবে হলেও আর ৪-৫ বছর বাঁচব। না হয় ২ বছর কমই বা বাঁচব। তা নিয়ে চিন্তা করছ কেন?’ কিন্তু আমার কথায় ওরা খুব একটা আশ্বস্ত হতে পারেনি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে জোর করে ব্যাঙ্কে পাঠান তাঁর স্ত্রী মঞ্জু। সেই সময় মা এবং ছেলে ঘরের সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন বলে দাবি তাঁর।
এ নিয়ে পিন্টু সরকার নামে বিশ্বনাথের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘শুভদীপ কোনও কাজ করত না। বাবার পেনশনের টাকায় কোনও রকমে সংসার চলত ওঁদের। আমাদের কাছে শুভদীপ প্রায়ই বলত, ‘বাবা মারা গেলে আমরা কী খাব?’ তাই বলে ওরা যে আত্মহত্যা করবে তা ভাবতে পারিনি।’’
এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহ দু’টি উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। মৃত্যুর আগে শুভদীপ তাঁর পায়ে পেন দিয়ে লিখে গিয়েছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’ বিশ্বনাথের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy