শুশ্রূষার পরে। নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি শান্তিপুর থানার ঘোড়ালিয়া ঘোষপাড়ার বাসিন্দা শিবপ্রসাদ ঘোষ বাইকে চেপে ফুলিয়ার দিক থেকে বাড়িতে ফেরার পথে জাতীয় সড়কে চিনা মাঞ্জা সুতোয় জখম হন। তাঁর থুতনির কাছে হঠাৎই উড়ে এসে এই সুতো জড়িয়ে যায়। সেখানে কেটে গিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। পরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সেলাইও করাতে হয়।
শিবপ্রসাদ বলেন, “বাইকে চেপেই ফিরছিলাম। রাস্তায় হঠাৎ সুতো উড়ে এসে জড়িয়ে গেল। ছাড়াতে গিয়ে দেখি ব্লেডের মতো ধার। কোনওমতে বেরিয়ে এসে চিকিৎসকের কাছে যাই।” এই ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। তবুও ঘুড়ি ওড়ানোর কাজে চিনা মাঞ্জা সুতোর ব্যবহার চলছেই। বছর দুয়েকের মধ্যে বেশ কয়েক জন এবং কিছু প্রাণীও জখম হয়েছে এই সুতোর কারণে। তাই বিপজ্জনক চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধের আবেদন নিয়ে শুক্রবার শান্তিপুর শহরে সচেতনতার প্রচার চালাল একটি সংস্থা।
সাধারণ যে সুতো ব্যবহার করে আগাগোড়া ঘুড়ি ওড়ানোর কাজ চলে এসেছে, তার চেয়ে দাম অনেকটাই বেশি এই চিনা মাঞ্জার। তবুও ইদানিং কালে বিভিন্ন জায়গায় চিনা মাঞ্জা সুতোর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। শান্তিপুরেই গত বছর দুয়েকের মধ্যেই বেশ কয়েক জন চিনা মাঞ্জা সুতোয় জখম হয়েছেন। এই চিনা মাঞ্জা সুতো ব্যবহার বন্ধের আর্জি নিয়ে শুক্রবার শান্তিপুরে সচেতনতার প্রচার চালায় একটি সামাজিক সংস্থা। সংস্থার তরফে প্রদ্যোত মহলদার বলেন, “আমরা চাই আগের সেই সাধারণ সুতো ফিরে আসুক। চিনা মাঞ্জা সুতোয় বহু মানুষ আহত হচ্ছেন। আমরা এই সুতোর ব্যবহার বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি অনেক আগে থেকেই।”
এই ধরনের চিনা মাঞ্জা সুতো উড়ে এসে বড়সড় বিপদের আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই। কয়েক বছর ধরেই ঘুড়ি ওড়ানোর ক্ষেত্রে এই সুতোর চাহিদা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘুড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একাংশের মতে, এই সুতো সহজে ছেঁড়া যায় না। একবার কিনলে তা বেশ কয়েক বছর ব্যবহার করা যায়, যদি না ঘুড়ির সঙ্গে কেটে গিয়ে উড়ে চলে যায়। এই সুতো এমনিতেই খুব ধারালো। কাজেই, তাতে আলাদা করে মাঞ্জা দেওয়ার দরকার পড়ে না। অন্য দিকে, সাধারণ সুতোর ক্ষেত্রে দাম কম হলেও তা বেশি দিন ব্যবহার করা যায় না। আবার, তাতে মাঞ্জা দিতে হয়। সেখানেও সময়, অর্থ, পরিশ্রম ব্যয় করতে হয়। এই কারণেই বর্তমানে অনেকে এই চিনা মাঞ্জা সুতোর ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে।
তবে এই চিনা মাঞ্জা সুতো ক্ষুরধার হওয়ায় যখনই কোনও ঘুড়ির সঙ্গে তা কেটে যাচ্ছে এবং উড়ে এসে যখন কোনও মানুষের গায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে, তা ধারালো অস্ত্রের মতো চামড়া কেটে শরীরে বসে যাচ্ছে। বাইক, সাইকেল আরোহীদের ক্ষেত্রে তা অনেকটাই বিপজ্জনক এবং কখনও কখনও প্রাণঘাতীও। ফলে, এই সুতোর ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ না থাকলে আগামী দিনে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন সকলে।
রানাঘাটের মহকুমাশাসক রানা কর্মকার বলেন, “এই বিষয়ে সমস্ত জায়গায় প্রশাসনের তরফে সচেতনতা এবং প্রচারের কথা বলা আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy