Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Mamata Banerjee

রিক্তাকে প্রশাসনিক সভায় দেখে মমতার স্মৃতি খুঁজল ফেলানি বসাক এবং নিজের গ্রেফতারির ঘটনা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৬:২৯
Share: Save:

প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পরিষদের কাজকর্মের খতিয়ান শুনতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে নমস্কার জানিয়ে সবে মাত্র উন্নয়নের দীর্ঘ তালিকা পড়তে শুরু করেছেন নদিয়া জেলা পরিষদের সভাপধিপতি। তাঁর দিকে কিছু ক্ষণ চেয়ে থেকে আচমকাই পাশে বসা মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে মমতা বলে ওঠেন, ‘‘এই সেই রিক্তা না, যে ফেলানি বসাককে আমার কাছে নিয়ে গিয়েছিল? লালবাজার আমাকে অ্যারেস্ট করেছিল!’’

বৃহস্পতিবার নদিয়ার রানাঘাটে জেলা প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডুকে দেখে প্রায় তিন দশক আগের সেই মহাকরণ অভিযানের স্মৃতি রোমন্থন করতে দেখা গেল মমতাকে। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শেষ হতেই রিক্তাও তাঁকে মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘আপনাকে ভীষণ মেরেছিল ওরা।’’ জবাবে মমতাও বলেন, ‘‘সে তো মেরেই ছিল!’’

ঘটনাচক্রে, রানাঘাটের ছাতিমতলার যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন মুখ্যমন্ত্রী, সেখান থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে শান্তিপুরের বেলঘরিয়া-১ পঞ্চায়েতের কালীপুর এলাকাতেই ফেলানি বসাকের বাড়ি। যাঁর মূক-বধির ও দৃষ্টিহীন ‘ধর্ষিত’ মেয়েকে তৎকালীন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন ও পার বাংলা থেকে ছিন্নমূল হয়ে চলে আসা উদ্বাস্তু পরিবারের মেয়ে, ফুলিয়ার এই রিক্তা।

সাল ১৯৯৩। বাম আমল। মূক-বধির মেয়ের ধর্ষণের বিচার পেতে রিক্তার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন ফেলানি। রিক্তা এবং উজ্জ্বল বিশ্বাস (যিনি বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী)-ই সেই দিন ফেলানি ও তাঁর ‘ধর্ষিত’ মেয়েকে মমতার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক তার পরেই ঘটে ২১ জুলাইয়ে মমতার মহাকরণ অভিযানের সেই ঘটনা।

সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবির পাশাপাশি ফেলানির মেয়ের ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি নিয়ে সেই দিন মহাকরণে হাজির হয়েছিলেন মমতা। কংগ্রেসের সেই আন্দোলন প্রতিহত করতে গিয়ে মারমুখী হয়ে উঠেছিল পুলিশও। যদিও মেয়ের প্রতি অন্যায়ের সুবিচার পাননি ফেলানি। সাপের কামড়ে নির্যাতিতার মৃত্যুর পর থেমে গিয়েছে বিচারপ্রক্রিয়াও। তবে, প্রতি বছরই নিয়ম করে ফেলানির বাড়িতে পৌঁছে যায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের ‘শহিদ-স্মরণ’ কর্মসূচির আমন্ত্রণপত্র।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অভিমত, যদি সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম আন্দোলন রাজ্যে বিরোধী নেত্রী হিসাবে মমতাকে প্রতিষ্ঠা করে থাকে, তা হলে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল ২৯ বছর আগের সেই ২১ জুলাইয়ে।

মমতা পুরনো দিনের লড়াইয়ের সেই স্মৃতি উস্কে দেওয়ায় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন রিক্তাও। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে দিদির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছি। এই মানুষটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। কোনও কিছুই তিনি ভোলেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Writers' Building
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy