প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ওরফে নন্দ সাহা দলের প্রচারে না থাকায় তা ভোটযুদ্ধে তৃণমূলকে কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা। প্রতীকী ছবি।
তাঁকে ছাড়া ভোট হয় না নবদ্বীপে। অন্তত গত তিন দশকে কখনও এমনটা হয়নি। ভোটের আগে দলের প্রচারে তিনি এলাকা চষে ফেলছেন, তা দেখতেই অভ্যস্ত সাধারণ মানুষ। তবে অসুস্থতার কারণে এবার নেই নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের চারবারের বিধায়ক তথা প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ওরফে নন্দ সাহা। যা ভোটযুদ্ধে ওই এলাকায় তৃণমূলকে কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
এ দেশে গরমকাল ছাড়া ভোট হয় না। ফলে সাদা বারমুডা কিংবা লুঙ্গি। লাল ডোরাকাটা গামছা খালি গায়ের উপর আলতো করে ফেলা। বাড়িতে বা দলীয় কার্যালয়ে বসে কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে অনর্গল কথা বলে চলেছেন পুণ্ডরীকাক্ষ, কর্মী-সমর্থকদের ‘নন্দদা’। কিংবা দুধ-সাদা পাজামা পাঞ্জাবিতে বাইকের পিছনে বসে চষে ফেলছেন নবদ্বীপের অলিগলি থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম। নয়ের দশক থেকে এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত নবদ্বীপের মানুষ। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে না সেই ছবিটাই। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই মুহূর্তে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুণ্ডরীকাক্ষ। কয়েক বছর আগে প্রথম স্ট্রোক হয় তাঁর। এর উপর গত ২৯ ডিসেম্বর নবদ্বীপে একটি পদযাত্রায় তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার জেরেই এবারের ভোটে এখনও পর্যন্ত তাঁর যোগদান অনিশ্চিত।
নিজের গড় নবদ্বীপে নন্দ সাহার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। তাঁর জনসংযোগের কৌশল সকলের থেকে স্বতন্ত্র। ভোট পাখিদের মতো ভোটের আগে নয়, বছরভর নিজের নির্বাচনী এলাকার গ্রাম থেকে শহরে নিরন্তর রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া, নিয়মিত মিটিং-মিছিল করা তাঁর রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। এলাকায় কোনও পারিবারিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অথচ তিনি যাননি এমন ঘটনা বিরল। প্রচারে বেরিয়ে সাধারণ ভোটার তো বটেই বিরোধী নেতা কর্মীদের বাড়িতে হুটহাট ঢুকে পড়া বা সামনে কোনও বর্ষীয়ান মানুষকে দেখলে প্রণাম করা— এসবই তাঁর নিজস্ব স্টাইল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এলাকার সেই জনপ্রিয় নেতার না থাকাই এবার ফারাক গড়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। সাধারণ কর্মী সমর্থকদের মুখে ঘুরে ফিরে ‘নন্দদার’ কথা। নবদ্বীপে থাকলে ভোটের আগে দোল উৎসবকে কেমন করে ব্যবহার করতেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন নবদ্বীপে মহাপ্রভুকে প্রণাম করে ভোট প্রচার শুরু করার একটা রীতি এই অঞ্চলে আছে। এবার সেটাও হল না। অথচ তমলুকের বিজেপি প্রার্থী নবদ্বীপের বাসিন্দা হওয়ায় আগে মহাপ্রভু, পোড়ামাকে পুজো দিয়ে তবে প্রচারে গিয়েছেন।
পুণ্ডরীকাক্ষের বদলে এবার এলাকায় ভোট দেখভালের দায়িত্ব বর্তেছে দলের নেতা তথা নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহার উপর। কিন্তু জনপ্রিয়তায় ‘নন্দদা’র সঙ্গে তাঁর তুলনাই চলে না বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এতেই তৃণমূল ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা দলের নেতা-কর্মীদের। তবে বিমানকৃষ্ণ তা মনে করছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘নন্দ সাহা অনুপস্থিত বলে কারও আনন্দিত হওয়ার কারণ নেই। নবদ্বীপের মানুষ আরও বেশি ভোট দেবেন এ বার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy