বিপজ্জনক বেওয়া সেতু। নিজস্ব চিত্র।
‘সেতুটি ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য নিরাপদ নয়।’—ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ এই বোর্ড ঝুলিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তার পরেও পাথর ও বালি বোঝাই শয়ে শয়ে ট্রাক ঝাড়খণ্ডের ৮০ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরিয়ে অবাধে এই বিপজ্জনক সেতু পেরিয়ে ফরাক্কায় ঢুকছে। সেতু থেকে ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংযোগকারী ১০ কিলোমিটার সড়ক পথটিও খানা খন্দে ভরে এখন ডোবার আকার নিয়েছে। ফলে প্রতিদিনই এই পথে দুর্ঘটনায় পড়ছে একাধিক যান। শনিবার এই রাস্তা ও সেতু সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।
ষাটের দশকে ফরাক্কা ব্যারাজের তৈরি বেওয়া সেতুতে ফাটল ধরে। আগাছা জন্মেছে সেতুর পিলারে। সেতুতে ভারী ট্রাক উঠলেই সেতুটি কাঁপে। সেই সেতু তাদের হলেও আর তা প্রয়োজন পড়ে না ফরাক্কা ব্যারাজের। অভিযোগ, তাই নজর নেই তাদের। অথচ এই সেতুই ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম। সেতুটি ভেঙে পড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে ফরাক্কার বহু গ্রাম। ঝাড়খণ্ড থেকে সমস্ত রকম নির্মাণ সামগ্রী আসার পথও বন্ধ হয়ে যাবে।
বিহারের মোকামা থেকে শুরু হয়ে মুঙ্গের, সাহেবগঞ্জ, বারহারোয়া হয়ে ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে মেশার কথা ৮০ নম্বর জাতীয় সড়কটির। অভিযোগ, সে কাজ আজও হয়নি। ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ এই ১০ কিমি সড়কটি। ফলে ফরাক্কার বেওয়া, ধর্মডাঙা, ঘোড়াইপাড়া, শঙ্করপুর, নিশিন্দ্রা-সহ ১২টি গ্রামের বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন।
গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মীর তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বেওয়া সেতু থেকে শঙ্করপুর ১০ কিমি রাস্তা ফরাক্কা ব্যারাজ তৈরি করে ব্যারাজ তৈরির সময় ঝাড়খণ্ড থেকে পাথর, বালি আনার জন্য। তার পরে সেতু বিপজ্জনক বোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে দায় সেরেছে ব্যারাজ। রাস্তায় বড় বড় গর্ত। বালি, পাথর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই ওভার লোডেড হয়ে যাচ্ছে এই রাস্তা দিয়ে। ফলে দুর্ঘটনা বেড়েছে। ষাটের দশকে তৈরি হওয়া এই সেতুর বয়স প্রায় ৬৫ বছর। ফলে সেতুর আর দোষ কী?’’
স্থানীয় বাসিন্দা অমল মিশ্র বলেন, ‘‘এই রাস্তাটি ফিডার ক্যানাল পাড় বরাবর পরিদর্শনের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে ব্যারাজ। সেই পরিদর্শন সড়কের উপর দিয়ে চার লেনের ৮০ নম্বর জাতীয় সড়ক হলে ফিডার ক্যানাল ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সড়ক গড়তে আপত্তি জানায় ফরাক্কা ব্যারাজ। সেই কারণেই ৮০ নম্বর সড়ক নির্মাণের মাত্র ১০ কিমি অংশ আজও তৈরি হয়নি। ফলে ৩৪ নম্বর সড়ক সংযুক্ত হয়নি আজও। ওভার লোডেড ভারী যান চলে দিনদিন সেতুটি বিপদের মুখে পড়েছে। সেতু পেরিয়ে ফরাক্কাগামী সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে উঠেছে। পদে পদে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’’
ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সেতু ও রাস্তা দুটিই খুব বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে। তবে আপাতত কেদারনাথ সেতু থেকে নিশিন্দ্রা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে জেলা পরিষদ ২.০১ কোটি টাকার টেন্ডার ডেকেছে। ধাপে ধাপে সে রাস্তা করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy