শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন। —নিজস্ব চিত্র।
একদিকে ভাঙন রোধ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা, অন্য দিকে শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙনের বাড়বাড়ন্ত। এর মধ্যেই নদীর পাড় থেকে সমস্ত জনবসতিকে অন্যত্র সরে যেতে নির্দেশ দিল প্রশাসন। এই অবস্থায় কার্যত দিশেহারা ভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষজন। বাড়ছে ক্ষোভ।সেচ দফতরও জানিয়ে দিয়েছে, জল না কমলে অক্টোবরের আগে ভাঙন ঠেকাতে বালির বস্তা ফেলা ছাড়া কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।আর স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ তাতে আরও বেড়েছে। বালির বস্তা ফেলার কাজে ক্ষুব্ধ ভাঙনগ্রস্তরা বাধা দিলে ছুটে আসতে হয়েছে পুলিশকে।
সেচ কর্তাদের মতে, গঙ্গা পাড়ের উপরের স্তরের মাটি শক্ত হলেও দু’ফুট নীচেই রয়েছে নরম সাদা বালি। জল বাড়া-কমার ফলে সেই বালি জলের ধাক্কায় ধুয়ে সরে গিয়ে আলগা হচ্ছে মাটি। ফলে পাড় লাগোয়া বাড়ি হুড়মুড় করে নদীতে ধসে পড়ছে।
এলাকার বাসিন্দা ও জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আয়েশা জুলেখা সরাসরি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলাকে শমসেরগঞ্জে ভাঙনের জন্য দায়ী করেছেন। তার অভিযোগ, ‘‘শমসেরগঞ্জ ও সুতিতে শাসক দলের ৫ জন বিধায়ক, এক জন সাংসদ ও সভাধিপতি থাকা সত্বেও কেন শমসেরগঞ্জের মানুষকে এই অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে? দফায় দফায় ভাঙন রোধে রাজ্য সেচ দফতরকে বরাদ্দ করা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা, মুখ্যমন্ত্রী শমসেরগঞ্জে এসে বরাদ্দ করে গেছেন ১০০ কোটি টাকা। সে টাকা কোথায়।”
আয়েশা বলেন, ‘‘এখন ঘোষণা করা হচ্ছে নদী পাড় থেকে সমস্ত পরিবারকে সরে যেতে হবে। কিন্তু বলছেন না তাঁরা যাবেন কোথায়?’’
শমসেরগঞ্জে গঙ্গার জলস্তরের বিপদসীমা ২১.৯০ মিটার। সোমবার সেই জলস্তর রয়েছে ২০.৮০ মিটারে। অর্থাৎ বিপদসীমার চেয়ে ১.১০ মিটার নীচে। ফরাক্কার উত্তরে মালদহের মানিকচকে জলস্তর বিপদসীমার মাত্র ২৬ সেন্টিমিটার নীচে। জলস্তর আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বোগদাদনগরের তৃণমূলের উপপ্রধান ভিকুরাম সরকার বলছেন, ‘‘এক সপ্তাহ থেকে ফের শুরু হয়েছে। ৪০টিরও বেশি ঘর, ক্লাব, মন্দির, ৮টি দোকান সব গঙ্গা-গর্ভে। কেন্দ্র একেবারে চুপচাপ। রাজ্য সাধ্য মতো যা পারছে করছে। এই দুর্দশা চোখে দেখার নয়।”
শমসেরগঞ্জের বিডিও সুজিতচন্দ্র লোধ বলেন, ‘‘সেচ দফতর ভাঙন আটকাতে কাজও শুরু করেছেন। যারা ভাঙনের কবলে পড়েছেন বা নদী পাড়ে রয়েছেন তাঁদের সেখান থেকে বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy