নিজস্ব চিত্র।
ব্যবসা ফেলে হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি ছুটে এসেছিলেন বাবা। এসেই চিৎকার। রান্নাঘর থেকে গলদঘর্ম হয়ে বেরিয়ে আসেন মা। ছোট ছেলের খোঁজে পর ক্ষণেই ঘরে ছুটে যান বাবা। ঘর ফাঁকা। টেবিলে বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফোন করেও ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। দুপুর থেকে বাড়িতে নাওয়াখাওয়া বন্ধ সকলের। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়াতেই বাড়ি ঢোকেন ছেলে। কেউ প্রশ্ন করার আগেই যুবক বলেন, ‘‘দেয়াল লিখতে গিয়েছিলাম। লোক কম, তাই নিজে লিখলাম।’’
বাবা পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘তুই জানিস, কার বিরুদ্ধে ভোট দাঁড়িয়েছিস?’’ ছেলের জবাব, ‘‘নেতা নয়। লড়াই নীতির বিরুদ্ধে।’’ মাত্র ২২ বছর বয়সে ভোটে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হলে এই ঘটনার কথাই বললেন সৌরনীল সরকার। নদিয়ার তেহট্ট ১ ব্লকের বেতাই ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭৭ নম্বর বুথে বামেদের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন এই কলেজ পড়ুয়া। তাঁর বিপক্ষে রয়েছেন শাসকদলের সদ্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত পোদ্দার ওরফে কালা।
কলেজে প্রবেশের পর থেকেই সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সৌরনীল। কিন্তু ‘প্রভাবশালী’ সঞ্জিতের বিরুদ্ধে ছেলের পঞ্চায়েতে প্রার্থী হওয়া মানতে পারছে না পরিবার। এই খবর পেয়ে আঁতকে উঠেছেন সৌরনীলের দাদা আইআইটি ধানবাদের পদার্থবিদ্যার গবেষক সুরজিৎ সরকার। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘ভোট তো পরে, ভাই বেঁচে থাকতে তো?’’ বাবা মিল্টন সরকারেরও একই কথা। বলেন, ‘‘আমরা ছাপোসা মানষ। প্রধানের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস আমার নেই। ছেলের কথা ভেবে খুব চিন্তা হচ্ছে।’’ ভবিষ্যতে এলাকা ছাড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করে কেঁদে ফেলেন মা-ও।
সৌরনীলের পরিবারের আতঙ্কের কথা শুনে সঞ্জিত বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝেই একটা বাচ্চা ছেলেকে বলির পাঁঠা করে দিল বামেরা। সৌরনীলকে আমি স্নেহ করি।’’ বামেরা অবশ্য নিশ্চিত, ভোটে সৌরনীলই জিতবেন। নদিয়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘সঞ্জিত পোদ্দারের বিরুদ্ধে কয়েক লক্ষ টাকার আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগের মামলা রুজু করেছিল তৃণমূল সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে আমাদের প্রার্থী মেধাবী, শিক্ষিত, সাহসী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy