আদালতে তোলা হচ্ছে ধর্ষণ-কাণ্ডের অভিযুক্তদের (বাঁ দিকে)। রানাঘাট আদালতে সিবিআইয়ের নথি (ডানদিকে)। নিজস্ব চিত্র।
কাছেই বৈধ শ্মশান থাকা সত্ত্বেও মৃত নাবালিকাকে গ্রামের একটি ‘গুপ্ত শ্মশানে’ দাহ করা হয়েছিল বলে দাবি করলেন গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত পক্ষের এক আইনজীবী। সিবিআই তদন্তের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
এই মামলায় অভিযুক্ত সোহেল ওরফে ব্রজ গয়ালি এবং তার বাবা সমরেন্দু গয়ালি-সহ সাত ধৃতকে শুক্রবার ফের রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হয়। বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক সুতপা সাহা তাদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন। আগামী ১ জুলাই তাদের ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ৪ এপ্রিল তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দু গয়ালির বাড়িতে তার ছেলে ব্রজ ওরফে সোহেল গয়ালির জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল মেয়েটি। সেখানেই মদ খাইয়ে তাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তক্ষরণের জেরে পরের দিন ভোরে মেয়েটি মারা যায়। ৫ এপ্রিল সকালেই গ্রামের শ্মশানে তার দেহ দাহ করা হয়।
এ দিন ব্রজর মামাতো ভাই, ধৃত প্রভাকর পোদ্দারের আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে প্রশ্ন তোলেন: গ্রামের গুপ্ত শ্মশানে কেন নাবালিকার দেহ সৎকার করল তার পরিবার? ওই এলাকায় একটি বৈধ শ্মশান আছে, সেখানে কেন করা হল না? তা হলে কি ধরে নিতে হবে সেখানে অবৈধ সৎকার হয়, আগেও হয়েছে? দেহ লোপাটের মতো কাজের জন্য কি তা ব্যবহার করা হয়? সে দিনের শ্মশানযাত্রীরা তথ্যপ্রমাণ লোপাটে অভিযুক্ত কিনা তার তদন্ত রিপোর্ট কোথায়? যাঁরা শ্মশানের রক্ষণাবেক্ষণ করেন, তাঁরা সিবিআইয়ের তদন্তের আওতায় এসেছেন কি না সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যে শ্মশানে কিশোরীর সৎকার হয়েছিল, পাশাপাশি দু’টি গ্রামের সব মৃতদেহই সেখানে দাহ করার চল ছিল। বৈধ শ্মশানের মতো সেখানে মৃতদেহ দাহ করতে চিকিৎসকের দেওয়া ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লাগত না। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মেয়ের দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে মৃতার মা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন। তবে তাঁর ‘স্বামীর উপস্থিতিতে’ সৎকার হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার চার দিন পরে, গত ৯ এপ্রিল চাইল্ড লাইনের হস্তক্ষেপে ওই অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার মা। তার পরেই পুলিশ ব্রজ ও প্রভাকরকে গ্রেফতার করে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১১ জনের গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করানো হয়। দু’দিন পরে হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার নেই। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট আট জন গ্রেফতার হয়েছে। তার মধ্যে এক জন নাবালক হওয়ায় তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করিয়ে হোমে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন হাই কোর্টের বিচারপতির সিবিআই সম্পর্কিত একটি মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করেন, সিবিআই প্রকৃত সত্য সামনে আনছে না যা সাধারণ মানুষ তাদের থেকে আশা করে। স্থানীয় পুলিশের মতোই তদন্ত হচ্ছে। ধৃতদের তরফে মোট চার আইনজীবী সওয়াল করেন। আইনজীবী অপূর্ব বিশ্বাস দুই ধৃত দীপ্ত গয়ালি ও আকাশ বারুইয়ের জামিনের আবেদন করে জানান, তারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়, ব্রজ বা সমরেন্দুর সঙ্গী নয়, প্রভাবশালীও নয়।
সিবিআইয়ের আইনজীবী পাল্টা বলেন, ধৃতদের ফের জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হতে পারে এবং তারা জামিন পেলে তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এর পরেই ধৃতদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy