কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া রোগীর ভিড় (বাঁ দিকে)। নিজের ঘরে চিকিৎসকের দেখা নেই (ডান দিকে)। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
কোনও রকম আগাম নোটিস ছাড়াই অনুপস্থিত থাকলেন চিকিৎসক। আর তার জেরে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হল জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের। প্রয়োজনীয় পরামর্শ না পেয়েই ফিরে যেতে হল বেশ কয়েক জন রোগীকে। আবারও এক বার জেলা হাসপাতাল ‘থ্যালাসেমিয়া ইউনিট’-এর মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা জেলা হাসপাতালে রক্ত নেওয়ার পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা-সহ অন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে আসেন। প্রতি দিন গড়ে প্রায় দেড়শো জন করে আসেন জেলার এই থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিটে। এঁদের মধ্যে গড়ে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় জন করে নতুন রোগী আসেন হাসপাতালেরই বহির্বিভাগ থেকে। তাঁদের পরীক্ষা করে, প্রয়োজনীয় ওষুধের পরামর্শ দেওয়া, রক্ত নেওয়ার সময়ে কোনও রোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা-সহ একাধিক বিষয়ের জন্য প্রতি দিন এক জন করে চিকিৎসক থাকার কথা। তা ছাড়া, ইউনিটের নিজস্ব অন্তঃবিভাগের রোগীদের চিকিৎসা তো আছেই। কিন্তু অভিযোগ, দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মাঝে-মধ্যেই আগাম কোনও নোটিস ছাড়াই অনুপস্থিত থাকেন। মঙ্গলবারও সেই একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতো এ দিনও প্রায় দেড়শো জন রোগী এসেছিলেন। তার মধ্যে প্রায় পাঁচ জনকে জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক না আসায় কোনও রকম চিকিৎসা ছাড়াই তাঁদেরকে ফিরে যেতে হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
কেন এমনটা হল? কেন কোনও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না? থ্যালাসেমিয়া ইউনিটের মেডিক্যাল অফিসার সহেলী বিশ্বাস বলেন, “আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় যেতে পারিনি। তা ছাড়া, আজ তো আউটডোর ছিল না। ফলে, কোনও সমস্যা হয়নি।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বার এমন অভিযোগ ওঠায় বিকল্প পদক্ষেপ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে থ্যালাসোমিয়া বিভাগের জন্য আলাদা শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি, প্রয়োজনে শিশু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন উঠছে, কেন মেডিক্যাল অফিসারের অনুপুস্থিতির কথা আগাম নোটিস দিয়ে জানানো হল না? কেন বিকল্প অন্য কোনও চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হল না?
হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, “ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক বার অভিযোগ এসেছে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করেছি। কিন্তু এ দিন কেন ইউনিট থেকে শিশু বিভাগের কোনও চিকিৎসকে জানানো হল না, সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি। যদিও কোনও অভিযোগ পাইনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy