আক্রান্ত চিকিৎসকের বাড়ির গলি ঘিরে দেওয়া হল। নিজস্ব চিত্র
করোনা আক্রান্ত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সংস্পর্শে আসায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একের পর এক কর্তা ঘরে ঢুকে যেতে বাধ্য হয়েছেন। চারটি ক্যাম্পাসের দায়িত্বে থাকায় জেলা হাসপাতালের সুপারকেও যেতে হয়েছে নিভৃতবাসে। ফলে যখন পরীক্ষা ও চিকিৎসার কাজে গতি আনা দরকার, তখনই ধাক্কা খাচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ১ জুলাই থেকে জ্বরে ভুগছিলেন জেলা সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের ওই চিকিৎসক, যিনি যথেষ্ট দায়িত্বশীল বলে চিকিৎসক ও প্রশাসনিক মহলে পরিচিত। ৩ জুলাই থেকে তিনি হাসপাতালের ডিউটির পাশাপাশি নিজের চেম্বারে রোগী দেখাও বন্ধ করে দেন। বাড়িতেই নিভৃতবাসে চলে যান। ৬ জুলাই তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয়। দু’দিন পরে রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। তার পরেও সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ১৪ দিন পর্যন্ত তিনি গৃহবন্দিই ছিলেন। ১৫ জুলাই ফের তাঁর লালারস পরীক্ষা করা হয় এবং ১৭ জুলাই পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু ইতিমধ্যে ১৪ দিন হয়ে যাওয়ায় রিপোর্টের অপেক্ষা না করেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও যান। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার নোডাল অফিসার তথা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ এবং অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ ছাড়াও বেশ কয়েক জন কর্মী। বেশ কিছুক্ষণ জেলা হাসপাতালের প্রসব সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করে ওই চিকিৎসক যান জেলা হাসপাতালে। সেখানে সুপারের ঘরে গিয়ে কথাবার্তা বলেন। সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার ছাড়াও এক জন সিনিয়র নার্স ও তিন কর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কর্তাদের কেউ কেউ আবার সরাসরি ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে না এলেও তাঁর ব্যবহৃত গাড়ি ব্যবহার করে ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।
এই মুহূ্র্তে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্তা ও কর্মী গৃহ নিভৃতবাসে চলে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে জেলা হাসপাতালের সুপার-সহ হাসপাতালের পাঁচ জন গৃহবন্দি। জেলা হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক, এর আগেও একাধিক বার হাসপাতাল সুপারের দায়িত্ব সামলানো দেবব্রত দত্তকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যা পরিস্থিতি তাতে আপাতত আগামী কিছু দিন কেবল মাত্র জেলা যক্ষা আধিকারিক এবং প্রসূতি ও শিশু সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অফিসে এসে কাজ করবেন। কারণ এক মাত্র তাঁরাই ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসেননি। বাকি কর্তাদের বাড়ি থেকেই যাবতীয় কাজ চালাতে হচ্ছে। অফিসে বসে মুখোমুখি কথা বলে কাজ করার বদলে এখন মূলত ইন্টারনেট ও ফোনের মাধ্যমে কাজ চালাতে হচ্ছে তাঁদের। তাতে কাজ করা আগের চেয়ে সময়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েক জন কর্মী গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় তাঁদের জায়গায় নতুন দায়িত্ব নেওয়া কর্মীরাও প্রতি মুহূর্তে হোঁচট খাচ্ছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “আমরা হোম কোয়রান্টিনে থাকলেও কোনও সমস্যা হচ্ছে না। সকলেই ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে কাজ করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy