প্রতীকী ছবি।
ছেলে ঢুকতে দিচ্ছে না বাড়িতে। সাতাত্তর বছরের বৃদ্ধা মা তাই প্রশাসনের দোরে দোরে মাথা ঠুকছেন। তাঁর একটাই আকুতি— “আমায় একটু মাথা গোঁজার জায়গা দিক। আর কিছুই চাই না।” যদিও নিজের অবস্থানে অনড় ছেলে।
কৃষ্ণনগর শহরের হাতারপাড়া বারোয়ারির কাছেই পেল্লায় দোতলা বাড়ি বানান সুনীতিকুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি জেলা প্রশাসনিক ভবনে কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী শুভশ্রী ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। তাঁদের দুই মেয়ে এক ছেলে। ২০১৬ সালে মারা ৮৬ বছর বয়সের মারা যান সুনীতিবাবু। তাঁর আগে থেকেই ছেলে সুশোভন মুখোপাধ্যায় কর্মসূত্রে বাইরে থাকতেন। অভিযোগ, ২০১৭ সালে তিনি কৃষ্ণনগরে ফিরে এসে ওই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এবং তার পর থেকেই সমস্যার শুরু।
বৃদ্ধার অভিযোগ, ছেলে ও বৌমার গঞ্জনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাঁকে দেখাশোনার জন্য বাড়িতে সর্ব ক্ষণের একজন পরিচারিকাকে রাখেন। কিন্তু কিছু দিন পর ওই পরিচারিকাকে চলে যেতে বাধ্য করেন বৌমা অন্বেষা মুখোপাধ্যায়। তার পর থেকে এক সঙ্গেই খাওয়াদাওয়া করতেন।
অভিযোগ, তখনও বৃদ্ধার উপরে মানসিক নির্যাতন চলতে থাকে। এর মধ্যে তিনি দু’বার পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। কিন্তু ছেলে তেমন গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা না করানোয় শুভশ্রী ঘূর্ণীতে বড় মেয়ের কাছে চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে থেকে সুস্থ হওয়ার পরে কিছু দিন থাকেন ছোট মেয়ের কাছে। এর মধ্যে তিনি একাধিক বার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে গিয়েছেন।
ওই বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছেলে কারও কোনও কথাই শুনছে না। তিনি বলেন, “মহকুমাশাসক নির্দেশ দিয়েছিলেন নীচের তলায় আমি থাকব আর উপরের তলায় ওরা। কিন্তু সেই নির্দেশও মানল না।”
শুভশ্রীর প্রশ্ন, “আমায় মেয়েরা আশ্রয় দিয়েছে। তাদের কাছেই পড়ে আছি। বড় মেয়ে কত দিন আমায় এ ভাবে টানবে বলতে পারেন? তারও তো সংসার আছে!”
অসহায় মায়ের গলায় হতাশা ঝরে পড়ে, “আমি বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করলে ঘরে ঢুকতে দেওয়া তো দূরের কথা, ছেলে এখন সাড়াটুকুও দেয় না ভিতর থেকে।”
এই বিষয়ে সুশোভনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর স্ত্রী অন্বেষা বলেছেন, “এটা বিচারাধীন বিষয়। তাই কোনও মন্তব্য করব না।”
যদিও কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক অম্লান তলুকদার বলছেন, “জানি না বিষয়টা এখন কী অবস্থায় আছে। তবে যদি আমাদের নির্দেশ অমান্য করে থাকে, তা হলে ওই বৃদ্ধা আমায় জানালে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy