কালীাপুজোর রাতে পটকা। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।
‘সবুজ বাজি’ না-ই বা মিলুক, দীপাবলি যে একেবারে আতশহীন হবে না তার পূর্বাভাস ছিল গত দু’তিন দিনে জেলা জুড়ে কোথাও প্রকাশ্যে, কোথাও চোরাগোপ্তা বাজি বিক্রির ধুমে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নামতেই জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণে ফুটফাট করে অস্তিত্ব জানান দিতে শুরু করেছে শব্দবাজি। আকাশ আলো করে উড়ে গিয়েছে হাউই, টুকটাক ফেটেছে শেল। রাত যত বেড়েছে, কোথাও তুবড়ির ফুলকি উড়েছে, চরকি ঘুরেছে। পটকা, এমনকি চকলেট বোমের শব্দও পাওয়া গিয়েছে, তবে তার দাপাদাপি করোনাকালের আগে সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেকটাই কম।
বাজি পোড়ানো নিয়ে প্রশাসন ও আদালতের ‘কভি হাঁ কভি না’ পর্বে কিছুটা বিভ্রান্ত হলেও সুপ্রিম কোর্টের রায় জানার পরেই আতশবাজি ধরতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল পুলিশ। প্রথমে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ কেবলমাত্র পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেয়। যা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়। হাই কোর্ট তার রায়ে সমস্ত বাজি বিক্রি ও পোড়ানো বন্ধ করতে বলে। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান বাজি বিক্রেতারা। সুপ্রিম কোর্ট শুধু মাত্র পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ বাজি’ বিক্রি ও পোড়ানোর অনুমতি দেয়। অবশ্য তার আগেই জেলায় শব্দবাজি ধরার অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে গত বছরেও কিছুটা সংযম অভ্যাস করে আসা জনতার আংশিক সচেতনতা, যা না থাকলে শুধু আইন-আদালত দেখিয়ে বাজি পোড়ানো পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন। এক পুলিশ কর্তার কথায়, “তবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, শব্দবাজি যতটা সম্ভব যাতে আটকানো যায়।” সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে দুই পুলিশ জেলাতেই সক্রিয়তা বাড়ে। শুধু রানাঘাট পুলিশ জেলায় বুধবার রাত পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ন’শো কেজি বাজি। বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিন কোতোয়ালি থানার পুলিশ দোগাছি এলাকা থেকে প্রায় ৬০ কেজি শব্দবাজি-সহ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। নিষিদ্ধ বাজি-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে শান্তিপুর ও কল্যাণী থানা।
তবে তার পরেও এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এবং খরিদ্দারকে আটকানো যায়নি। অনেকেই গত বছরের বিক্রি না হওয়া বাজি এই বছর বিক্রি করার চেষ্টা করেছেন। এ বছরও অনেকে বাজি মজুত করে ফেলেছিলেন। ফলে আদালতের নির্দেশ আসার আগে এবং পরেও বিরাট অংশের মানুষের হাতে বাজি চলে গিয়েছে। দীপাবলির সন্ধ্যা নামার পরেই যার আঁচ মিলেছে। দক্ষিণে রানাঘাট, চাকদহ, শিমুরালির বিভিন্ন জায়গায় বাজির শব্দ পাওয়া গিয়েছে। কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ, শান্তিপুর, ফুলিয়াতেও ইতিউতি বাজি ফেটেছে। উত্তরে খুব বেশি না হলেও বাজি ফেটেছে করিমপুরে। তেহট্টে শব্দবাজির আওয়াজ যেমন মিলেছে, দক্ষিণে কল্যাণীতেও রাত গড়াতেই বাজির শব্দ মিলেছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পালকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। রানাঘাট পুলিশ জেলার কেউ কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy