রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত বেগুন চাষ, নদিয়ার দোগাছি। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
রেমাল ঘূর্ণিঝড় সে ভাবে মালুম হয়নি জেলায়। জেলার দক্ষিণে ঝড়ের আভাস খানিক পাওয়া গেলেও উত্তরে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। বৃষ্টির ক্ষেত্রেও তাই। দক্ষিণের তুলনায় উত্তরে বৃষ্টি হয়েছে কম। সোমবারের সেই ঝোড়ো হাওয়া যেমন চিন্তায় রেখেছে আনাজ বা ফুল-ফল চাষিদের তেমনই বৃষ্টিতে খুশি পাট এবং আমন চাষিরা।
জলের অভাবে নদিয়া জেলায় গত কয়েক বছর ধরে ক্ষতির মুখে পড়েছে পাট চাষ। বর্ষা ভাল না-হওয়ায় পাট পচানোর জল মেলেনি। গুণগত মান খারাপ হয়েছে। চাষের সময় জলাভাবে পাটের কাঙ্খিত বৃদ্ধি হয়নি। এ বারও সেই অর্থে বৃষ্টি হয়নি। ফলে নদিয়ায় পাটচাষ ফের সঙ্কটে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করছিলেন চাষিদের একাংশ। এমন সময়ে রেমালের বৃষ্টি স্বস্তি দিয়েছে তাঁদের।
বড় আন্দুলিয়ার চাষি রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সার্বিক ভাবে এই বৃষ্টি সব রকম চাষের জন্য উপকারী হয়েছে। তবে অনেক জমিতে পাটগাছ তিন ফুট উচ্চতা ছাড়িয়েছে। ঝড়ে তা নুয়ে পড়লে ফলন ভাল হবে না।’’ আমন চাষিরা জানাচ্ছেন, এখন বীজতলা তৈরির সময়। এই অবস্থায় জমি ভাল করে ভিজে যাওয়ায় চারা বসানোর কাজ ভাল হবে।
ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে মাচার ফসলের। সেই সঙ্গে পানের বরজ, কলা, পেঁপের মতো নরম কাণ্ডের গাছেরও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। করিমপুরের চাষি বিশ্বনাথ বিশ্বাস বলেন, “করিমপুর বা তেহট্টের দিকে বৃষ্টি তেমন হয়নি। ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। এতে পানের বরজ থেকে যাবতীয় মাচার আনাজের ক্ষতি হয়েছে। মাঠে গেলে বুঝতে পারব ঠিক কতটা ক্ষতি হল।” চাষিরা জানাচ্ছেন, এখন পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়সের মতো মরসুমি ফসল চাষ হয়। এই ঝড় সেই আনাজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। একই ভাবে ক্ষতির মুখে পান বরজ।
নদিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) দীপঙ্কর রায় জানিয়েছেন, তেমন বড়সড় ক্ষতি হয়নি বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান। তিনি বলেন, “সোমবার থেকে পরিস্থিতির ব্লকভিত্তিক খতিয়ান নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাটের জন্য জলের দরকার ছিল। খুবই ভাল হয়েছে।” ক্ষতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মাচার আনাজের একটু অসুবিধা হবে। যে সব জমিতে জল জমেছে, সেখানে বৃষ্টি কমলে জমির জল বার করার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে সমস্যা হতে পারে।” এখন আম-লিচুর ভরা মরসুম। এ বছর আমের ফলন কম। তার উপর যেটুকু আম হয়েছে, ঝোড়ো হাওয়ায় ঝরে পড়ার সম্ভবনা। সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এই বৃষ্টিতে বহুমুখী উপকার হবে চাষের। রোদ উঠলেই জমিতে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy