প্রতীকী ছবি।
প্রায় এক দশক কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয় নি। জেলার শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে (এমএসকে) চরম শিক্ষক সঙ্কট চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়ার সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। তার জেরে বেশ কিছু এসএসকে বন্ধ করে দিতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরকে। আরও বেশ কিছু এসএসকে এবং এমএসকে প্রায় বন্ধের মুখে।
যে সমস্ত এলাকায় এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও প্রাথমিক স্কুল নেই সেখানে একটি করে এসএসকে এবং যে সমস্ত এলাকায় দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনও হাইস্কুল বা জুনিয়র হাইস্কুল নেই সেখানে এমএসকে চালু করা হয়েছিল। নদিয়া জেলায় প্রায় ৫১০টি এসএসকে এবং ১০২টি এমএসকে চালু করা হয়। সব এমএসকে চালু রাখা গেলেও ১৪টি এসএসকে বন্ধ করে দিতে হয়ছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনও শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে ২০ জনের কম পড়ুয়া থাকলে সেটি বন্ধ করে দিতে হবে। ১৪টি কেন্দ্রে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে কমতে ২০ জনের নীচে নেমে এসেছিল। আরও বেশ কয়েকটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে প্রায় একই পরিস্থিতি। আগে এসএসকে এবং এমএসকে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীনে ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সেগুলি শিক্ষা দফতরের হাতে চলে এলেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে ৩০ জন পড়ুয়া প্রতি এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা। প্রতিটি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে ন্যূনতম ছয় জন শিক্ষক থাকার কথা। ২০১০ সালে, বাম জমানায় সেই মতোই শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু তার পর আর কোনও নিয়োগ হয়নি। অথচ গত এক দশকে প্রচুর শিক্ষক অবসর নিয়েছেন। প্রথম দিকে এসএসকে ও এমএসকে মিলিয়ে জেলায় প্রায় উনিশশো শিক্ষক ছিলেন। তা কমতে কমতে ১৪৮৪ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে এসএসকে-গুলিতে ১০৪৬ জন আর এমএসকে-গুলিতে ৪৩৮ জন শিক্ষক রয়েছেন।
বর্তমানে মোট শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের অন্তত ১২ শতাংশের ক্ষেত্রে মাত্র এক জন করে শিক্ষক রয়েছেন। অর্থাৎ এক জন শিক্ষককেই প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নিতে হচ্ছে। ফলে কোনও ক্লাসেই পড়ুয়াদের ঠিক মতো পঠনপাঠন হচ্ছে না। আর সেই কারণে অভিভাবকেরা সন্তানদের সেই সমস্ত এসএসকে থেকে সরিয়ে নিয়ে একটু দূরে হলেও পাশের প্রাথমিক স্কুলে বা এলাকার বেসরকারি নার্সারি স্কুলে ভর্তি করে দিচ্ছেন।
প্রশাসনের কর্তাদের একাশের মতে, শিক্ষকের অভাবই আসল কারণ। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্কুল গুলিতে পঠনপাঠনের গুণগত মান খতিয়ে দেখার জন্য প্রতিটি মহকুমা পিছু এক জন করে ‘ডিস্ট্রিক্ট কোয়ালিটি ম্যানেজার’ ও ২০টি স্কুল পিছু এক জন ‘অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজ়ার’ থাকার কথা। সেখানে এক জনও ‘ডিস্ট্রিক্ট কোয়ালিটি ম্যানেজার’ নেই, আবার ‘অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজ়ার’-এর সংখ্যাও কমতে কমতে ২৫ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে স্কুল থেকে শুরু করে পঠনপাঠনের গুণগত মান কমছে বলে অভিযোগ। আর সেই কারণেই কমছে পড়ুয়ার সংখ্যাও।
এখনও পড়ুয়ার অভাবে বন্ধ করে দেওয়ার জায়গায় না গেলেও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলির অবস্থাও বিশেষ ভাল নয় বলে দাবি শিক্ষকদের একাংশের। তাঁরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ কেন্দ্রেই শিক্ষক-সংখ্যা ছয় থেকে কমে তিন-চারে নেমেছে। নদিয়া জেলা পরিষদের সচিব তথা ডিস্ট্রিক্ট নোডাল অফিসার সৌমেন দত্ত বলেন, “রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy