Advertisement
E-Paper

টাকার বিনিময়ে নথি, পাসপোর্টও

হাঁসখালি ব্লকের বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথম জাল নথিপত্র দেখিয়ে জন্মের শংসাপত্র তৈরির ঘটনায় পুলিশ পঞ্চায়েতের সচিব-সহ চার অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪৪
Share
Save

ভূতুড়ে ভোটারের মত এ যেন ঠিক ভূতের ‘বার্থ সার্টিফিকেট’। কারণ, যার নামে জন্মের শংসাপত্র তৈরি হয়েছে তার অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত এমন চারটির মত শংসাপত্রের সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারীরা। টাকার বিনিময়ে জাল নথিপত্রের দেখিয়ে যাদের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে জন্মের শংসাপত্রে নামের বানান বা অন্য কোনও ভুল থাকায় টাকার বিনিময়ে নতুন শংসাপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক শংসাপত্র বাতিলের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করা হবে বলে জেলা পুলিশ জানিয়েছে।

হাঁসখালি ব্লকের বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথম জাল নথিপত্র দেখিয়ে জন্মের শংসাপত্র তৈরির ঘটনায় পুলিশ পঞ্চায়েতের সচিব-সহ চার অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি থেকে জন্মের শংসাপত্র বিলি সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে থাকে। জানা যায়, চাপড়া ব্লকের একেবারে সীমান্ত সংলগ্ন হৃদয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মাত্র এক বছরের মধ্যে ১১২৯টির মত ‘নন ইনস্টিউশানাল বার্থ সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছে। যা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়। শুরু হয় তদন্ত।

এই ঘটনায় পুলিশ ওই পঞ্চায়েতের জন্ম ও মৃত্যু দফতরের কর্মী মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করে। ওই পঞ্চায়েত থেকে ২০২৩-২৪ ও ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৩৩০০ ‘নন ইনস্টিউশানাল বার্থ সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ প্রথম দফায় ৫০টির মত শংসাপত্র নিয়ে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে দেখে, এমন চারটি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে যার অস্তিত্বই নেই। যে ঠিকানায় শংসাপত্রটি দেওয়া হয়েছে সেই ঠিকানায় ওই নামে আদতে কোনও ব্যক্তিই থাকে না। এর মধ্যে দু’টি কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণী ও দু’টি উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা এলাকার।

পুলিশের দাবি, ওই ৫০ জনের মধ্যে দু’জন পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশে চলে গিয়েছে। এক জনের পাসপোর্ট হয়ে গিয়েছে, আরেকজনের পাসপোর্ট তৈরি করতে দিয়েছে। দু’টি পাসপোর্ট বাতিলের জন্য পুলিশের তরফে আবেদন করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, এমন অনেক শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে যেখানে বাবা-মা দুই ধর্মের। কোথাও আবার ফর্মে বাবার জায়গায় মার নাম মায়ের জায়গায় বাবার নাম দেওয়া আছে। তার পরও সেই সমস্ত শংসাপত্র কী ভাবে ছাড়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তে আরও দেখা যাচ্ছে, নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জন্মের শংসাপত্র তৈরির পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান ছাড়াও উত্তরবঙ্গের জেলার বাসিন্দাদেরকেও এই পঞ্চায়েত থেকে শংসাপত্রে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত যত এগোবে এই সংখ্যা ততই বাড়বে বলেই দাবি তদন্তকারীদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

chapra

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}