Advertisement
E-Paper

অন্তর্দ্বন্দ্ব ভাবাচ্ছে সব পক্ষকেই

নেতাদের কোন্দল ক্রমশ গলার ফাঁস হয়ে চেপে বসছে যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলেরই। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার ও সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৬
Share
Save

জেলায় দলের প্রথম সারির নেতাদের কোন্দল ক্রমশ গলার ফাঁস হয়ে চেপে বসছে যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলেরই।

বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই জেলায় তৃণমূল ও বিজেপির ভিতরে নেতাদের বিবাদ প্রকট হয়ে উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, এই কোন্দলই শেষ পর্যন্ত সমস্ত হিসেবনিকেশ পাল্টে দিতে পারে।

নদিয়া জেলায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠী লড়াই এখন আর গোপন নেই। দলের অনেকেই স্বীকার করেছেন, প্রায় প্রতিটি বিধানসভা এলাকাতেই আড়াআড়ি দু’টো ‘লবি’ কাজ করছে। তা সে চাপড়া হোক বা নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জ হোক বা কৃষ্ণগঞ্জ। শান্তিপুর, চাকদহ, রানাঘাটের অবস্থাও একই রকম।

বিগত লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে সবচেয়ে বেশি ভোটে ‘লিড’ দিয়েছে চাপড়া বিধানসভা। গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে সেখানেও পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়ে উঠছে তৃণমূলের জন্য। একদিকে ব্লক সভাপতি জেবের শেখ আর এক দিকে বিধায়ক রুকবানুর রহমান। বোমাবাজি থেকে শুরু করে একাধিক খুনের ঘটনাও ঘটে গিয়েছে এই বিধানসভা এলাকায়। সম্প্রতি বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ চাপড়া ২ অঞ্চল সভাপতি কাংলা শেখ গ্রেফতার হয়েছেন। পলাতক তাঁর ছেলে।

ফুলিয়ায় এক কর্মী সভায় সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে নিজের ক্ষোভ গোপন রাখেননি বিধায়ক তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি শঙ্কর সিংহ। এর পরে আর তাঁকে দলের কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বীরনগরেও বারবার প্রাক্তন পুরপ্রধান এবং প্রাক্তন উপ পুরপ্রধানের শিবিরের মধ্যে সমস্যা সামনে এসেছে। গয়েশপুরে খোদ জেলা নেতৃত্বের সামনেই শহর সভাপতি বদল করা নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।

সম্প্রতি শান্তিপুরে দল এবং যুব সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বিধায়ক শিবিরের হাতে। এর পরে দলের কর্মী সম্মেলনে দেখা যায়নি পুর-প্রশাসক অজয় দে-কে। বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং পুর প্রশাসক অজয় দে-র সংঘাত বহু পুরনো। দিন কয়েক আগে বঙ্গধ্বনি পদযাত্রার প্রচারও বিধায়ক ও পুর-প্রশাসক শিবিরের তরফে হয়েছে আলাদা-আলাদা ভাবে।

নাকাশিপাড়ায় প্রথম দিন থেকে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব সামলে আসা অশোক দত্তকে সরিয়ে দেওয়ায় এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কালীগঞ্জেও প্রাক্তন বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কংগ্রেস থেকে আসা বর্তমান বিধায়ক হাসানুজ্জামানকে একই ছাতার তলায় আনতে না পারলে সমস্যা হবে বলে মনে করছেন দলের অনেকে। অভিযোগ, তেহট্টের বিধায়ক তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তর এলাকায় সমান্তরাল সংগঠন তৈরি করতে মরিয়া জেলা সভাপতির লোকজন।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর আবীর বিশ্বাসকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ে আসা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। চাকদহের মন্ত্রী তথা বিধায়ক রত্না ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন পুর-প্রধান দীপক চক্রবর্তীর বিবাদ মেটাতে পারেননি কেউই।মোটেও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই জেলা বিজেপি-ও।

বিজেপিতেও নদিয়া উত্তরে জেলা সভাপতি আশুতোষ পালের সঙ্গে প্রাক্তন সভাপতি মহাদেব সরকারের বিবাদে বারবার বিপাকে পড়েছে দল। দিন কয়েক আগে আশুতোষ পালকে প্রকাশ্যে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে মহাদেববাবুর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। জেলায় দিলীপ ঘোষের সভার দিনই কৃষ্ণনগরে জেলা দফতরে কর্মীদের বিক্ষোভ হয়। মুকুল রায়ের সভাতেও তেমন লোক না-হওয়ার পিছনে গোষ্ঠী-লড়াইয়ের কারণ উঠে এসেছে।

সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে মতুয়া নেতা মকুটমনি অধিকারী ও জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর বিবাদের কথাও এখন সকলেই জানেন। অশোক চক্রবর্তীকে পদ থেকে সরাতে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছেন জেলা কমিটির সিংহভাগ পদাধিকারী ও মণ্ডল সভাপতিরা।

তবে প্রকাশ্যে কোনও তরফই সমস্যার কথা মানছে না।

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় যেমন বলছেন, “স্থানীয় স্তরে মান-অভিমান থাকতেই পারে। কিন্তু দিদিমনি ডাক দিলে সকলেই সব ভুলে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বানীকুমার রায় বলেন, “দল বড় হলে একটু ঠোকাঠুকি হয়। লড়াই যখন বাইরের শত্রুর সঙ্গে হবে তখন সবাই একজোট হয়ে লড়াই করবে।”

আর বিজেপির নবদ্বীপ জোনের মুখপাত্র জগন্নাথ সরকারের উক্তি, “দল বেড়েছে। ফলে কিছু ছোটখাট সমস্যা থাকবে। ভোটে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, মানুষ মোদী সরকারের উন্নয়ন দেখেই বিজেপিকে ভোট দেবেন।”

TMC bjp Inner conflicts

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।