প্রতীকী ছবি।
উৎসবের আবহের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হল বিজেপির ন’জন মণ্ডল সভাপতিকে, যা নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। অনেকেই বিধানসভা ভোটের মুখে এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারছেন না। দলের একটা অংশের দাবি, প্রাক্তন সভাপতিকে কোণঠাসা করতে গিয়ে আখেরে দলেই ক্ষতি করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী।
নদিয়া জেলায় বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল দীর্ঘদিনের। এর আগে সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম কল্যাণ নন্দী, আবার এখন মহাদেব সরকার বনাম আশুতোষ পালের কোন্দল দলের প্রায় সকলেরই জানা। বিজেপি সূত্রের দাবি, সদ্য অপসারিত ন’জন মণ্ডল সভাপতিই প্রাক্তন উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের ঘনিষ্ঠ। তাঁকে কোণঠাসা করতেই তাঁর অনুগামীদের অপসারিত করে নিজের লোক বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বর্তমান সভাপতি আশুতোষ পাল।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অবিভক্ত নদিয়া জেলা কমিটি ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে দেওয়া হয়। জেলা সভাপতি আশুতোষ পালকে সরিয়ে উত্তরের সভাপতি করা হয় মহাদেব সরকার ও দক্ষিণে জগন্নাথ সরকারকে। মহাদেব সভাপতি হওয়ার পর তিনি নিজের মতো করে সংগঠনে রদবদল করেন। পদ থেকে সরে যাওয়ার কিছু দিন আগেও তিনি ১৩ জন মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন করেন। সেই সময়ে ৩৫ জন মণ্ডল সভাপতির মধ্যে ২৮ জনই মহাদেবের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবার মহাদেবকে সরিয়ে আশুতোষকেই নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি মহাদেব অনুগামীদের সরিয়ে নিজের মত করে জেলা কমিটি তৈরি করেন। এ বার হাত দিয়েছেন মণ্ডল কমিটিতে। এক জেলা নেতার দাবি, মহাদেবকে রাজ্য রাজনীতিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও তিনি জেলা রাজনীতিতে গোষ্ঠীবাজি করে যাচ্ছেন। তা ঠেকাতেই রদবদল। মহাদেব শিবিরের পাল্টা বক্তব্য, তিনি তৃণমূল স্তর নেমে রাজনীতি করে এসেছেন বছরের পর বছর। তাঁকে উপড়ে ফেলা অত সহজ নয়। এতে বরং দলেরই ক্ষতি হচ্ছে।
নদিয়া উত্তরে ৩৫টি মণ্ডলের মধ্যে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার দু’জন, নবদ্বীপের তিন জন, তেহট্টের দু’জন, পলাশিপাড়া ও চাপড়ার এক জন করে মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়্ছে। অপসারিতদের মধ্যে আছেন মহাদেবের বাড়ি যেখানে সেই জেলা পরিষদ ২৬ মণ্ডল সভাপতিও। এই মণ্ডলের অধীনে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপি গত ৩০ বছর ক্ষমতা ধরে রেখেছে। নবদ্বীপ উত্তর মণ্ডলের সদ্য অপসারিত সভাপতি শঙ্কর গোস্বামী বলছেন, “দিন কয়েক আগে ৫৮ জন বুথ সভাপতিই আমায় নির্বাচিত করেছেন। বিগত নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে দল। কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তার পরেও কেন আমায় সরিয়ে দেওয়া হল, বুঝতে পারছি না।” আবার ২৪ নম্বর জেলা পরিষদ মণ্ডলের অপসারিত সভাপতি পিন্টু ঘোষ বলেন,“ অবাক লাগছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমি দলের অনুগত সৈনিক।”
তাঁর অনুগামী মণ্ডল সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি বর্তমানে বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এটা দলের সাংগঠনিক বিষয়। সাংবাদমাধ্যমকে কেন বলতে যাব?” তবে বর্তমান সভাপতি আশুতোষ পালের দাবি, “আপনারা ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। মণ্ডলে যাঁরা ভাল কাজ করেন, তাঁদের জেলা সংগঠনে নিয়ে আসা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হবে। তাঁদের জায়গায় সেই সব মণ্ডলে সক্রিয় ও দূরদর্শী নেতৃত্বকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy