মাটি কাটা চলছেই। — ফাইল চিত্র।
আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়েই জঙ্গিপুরে অবৈধ মাটি কাটার রমরমা বেড়েছে। মাটি মাফিয়ারা ধরাও পড়ছে, আবার আইনের ফাঁক গলে যথারীতি জরিমানা মিটিয়ে ছাড়াও পাচ্ছে। ফের তারা গিয়ে মাটি কাটতে শুরু করছে ঠিক সেখানে।
ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক স্বপন সাহা বলছেন, ‘‘১০টি অঞ্চল প্রতি ১ জন ও অফিসে ২ জন মিলে ১২ জন রেভিনিউ ইন্সপেক্টর থাকার কথা। রয়েছেন ৩ জন। ফিল্ডের কর্মী ৬ জন। ৮৪টি মৌজা। কী করে সামলাবে। একাই কেউ মাটি ধরতে বুধবারের মতো মার খাবে।’’ অবৈধ ভাবে মাটি কাটার এই প্রবণতা মূলত কাশিয়াডাঙা, সেকেন্দ্রা, লক্ষ্মীজোলা সহ সর্বত্র। বাসিন্দারা বাধা দিতে গিয়ে মাফিয়াদের শাসানি ও হুমকির মুখেও পড়েছেন অনেকেই।কাশিয়াডাঙার এক পঞ্চায়েত সদস্যের কথায়, “সব মাটি মাফিয়ার পিছনেই শাসক দলের ছোট, বড় নেতাদের মদত। ফলে তা বন্ধ হওয়ার নয়।’’
তার উপরে বুধবারই ব্লকের ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের এক রেভিনিউ ইন্সপেক্টরকে বেধড়ক মারধোর খেতে হয়েছে। এরপর আর কোন ভরসায় মাটি কাটা রুখতে যাবে স্থানীয় মানুষ?বিঘের পর বিঘে চাষের জমি নষ্ট করে প্রকাশ্য দিন দুপুরেই চলছে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য।
ভাগীরথী লাগোয়া জমির উর্বর মাটি কাটা নিচ্ছে জেসিবি দিয়ে। ট্রাক্টর দিয়ে সেই মাটি গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। দিনের বেলায় হইচই হওয়ায় রাতেও বিরাম নেই মাটি কাটার। প্রতিবাদ করতে গেলেই গ্রামে বোমা পড়ছে ভয় দেখাতে। হাটপাড়ার বাসিন্দা রেজাব আলি শেখ বলছেন, “৪ বছর ধরে চলছে এই ভাবে বেআইনি মাটি চুরি। পঞ্চায়েত, পুলিশ, প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। তা না হলে দিন দুপুরে এ ভাবে মাটির গাড়ি যাচ্ছে কী করে? মাঠে পুকুরের মত গর্ত।”
রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের বিএলএলআরও স্বপন সাহা বলেন, “মাটি কাটার খবর পেলেই আমরা সেখানে যাই। মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ধরি। এ পর্যন্ত কত জরিমানা আদায় হয়েছে, সেটা গোপন ব্যাপার। তবে কেস হয়েছে অনেক। সমস্যা হচ্ছে কেস তো হবে জমির মালিকের বিরুদ্ধে। কিন্তু ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকায় কার কোনটা জমি তার রেকর্ড নেই। সব সিকোস্তি জমি। নদী ক্রমশ এগিয়ে আসায় বাস্তবের জমির সঙ্গে ম্যাপের কোনও মিল নেই। ফলে মালিকদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাচ্ছে না। অনুমতি ছাড়া মাটি কাটলে ৪ ডি ধারায় এফআইআর করার কথা। ধরুন রাস্তায় মাটি বোঝাই গাড়ি ধরলাম। আইনে আছে ২ বছরের জেল ও মাটি অনুযায়ী জরিমানা। কেউ যদি দু’বছরের জেলের বদলে কম্পাউন্ড জরিমানা দিয়ে দেয়, তবে তাকে আর জেলে যেতে হয় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy