—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পরীক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল কল্যাণীর কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
দীর্ঘ দিন ধরেই কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের পড়ুয়াদের অভিযোগ, পরীক্ষা হল থেকে শুরু করে নম্বরের ক্ষেত্রে কারচুপি করা হচ্ছে। বেশ কিছু পড়ুয়া ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাশের যোগসাজশে এই ধরনের কারচুপি হয়ে আসছে বলে অভিযোগ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। তাঁদের দাবি, এতদিন ভয়ে তাঁরা এই বিষয়ে মুখ খুলতে পারছিলেন না। কিন্তু অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় অধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর পরিস্থিতি পুরোটাই বদলে যায়। বিশেষ করে আর জি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর কলেজের ‘থ্রেট সিন্ডিকেট’ দুর্বল হয়ে পড়ায় ভয় কাটিয়ে সাধারণ পড়ুয়াদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, থ্রেট সিন্ডিকেটের দাদাদের অনুগত স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যর অপেক্ষাকতৃ ‘ভাল সিট’ দেওয়া হত। পরীক্ষার নম্বর বা রেজাল্টের ক্ষেত্রে কারচুপি করা হত বলেও অভিযোগ পড়ুয়াদের। এমনকী দাদাদের কথা না শুনলে ফেল করানোর হুমকিও দেওয়া হত। অনেক ক্ষেত্রে সেটা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। একই ভাবে আবার অনেক ক্ষেত্রে নম্বর বাড়িয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে। প্রমাণ-সহ এমন একাধিক উদারহণ সামনে আনা হয়েছে। পড়ুয়াদের দাবি, পাশ করতে হলে ৫০ নম্বর পেতে হবে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, একজন পেয়েছেন ৩৩ আর একজন ৪০ নম্বর। ওই দুই পড়ুয়ার নম্বর বাড়িয়ে পাশ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ উঠছে, স্নাতকোত্তরের (নাক কান গলা বিভাগে) চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্র্যাক্টিক্যালে উত্তীর্ণ না হওয়া দুই চিকিৎসক পড়ুয়াকে পরে পাশ করানো হয়েছে। অন্য কলেজ থেকে আসা শিক্ষক চিকিৎসকেরা এই পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। কোন পরীক্ষার্থীকে কত নম্বর দেওয়া হয়েছে, তা প্রিন্ট আউট করে সেখানে সই করেন পরীক্ষকেরা। অভিযোগ, সেই সই নকল করে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হত এতদিন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সদ্য অপসারিত অধ্যক্ষ অভিজিং মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “কোনও ভাবেই এটা সম্ভব নয়।”
অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করলেও শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাঁরা দিনের পর এই সমস্ত ঘটনার সাক্ষী। প্রতিবাদ করলেও কিছু হয়নি। গোটা বিষয়টি সামনে আসায় পড়ুয়াদের দাবি মেনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “পড়ুয়ারা নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন। একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy