অযোধ্যানগর সর্বজনীন আর হরিদাসমাটি ঐক্যতান— দু’টিই জেলা সদর বহরমপুর লাগোয়া। দুটোই হরিদাসমাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। আবার দুটো পুজো কমিটিই তাদের পুজো মণ্ডপ গড়তে বিদেশে হাত বাড়িয়েছে। এ সব দেখে শুনে মনে হতেই পারে, আনন্দময়ীর আগমন ঘিরে কেমন প্রবল মিলই না আছে ওই দুটি পুজো কমিটির মধ্যে। ভাবলে মস্ত ভুল হবে! বহিরঙ্গে যতই মিল দেখা যাক না কেন, ‘অন্তরে’ বড্ড বেশি রেষারেষি। পুজোর ক’টা দিন ভিন পাড়া থেকে নিজেদের পাড়ায় বেশি লোক টানতে দুই পুজোর কর্তাই তাই বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন।
হরিদাসমাটি ঐক্যতান নিজেদের পুজো মণ্ডপ গড়েছেন নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরের আদলে। গোপনে সেই খবর সংগ্রহ করে অযোধ্যানগর সর্বজনীন হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেনি। তাই ৭৪ বছরের প্রাচীন পুজোর কর্তারা দৌড় দিয়েছেন ফ্রান্সে। সেখান থেকে মণ্ডপের থিম সংগ্রহ করে আযোধ্যানগর সর্বজনীনের পুজো কর্তারা। তাঁরা মণ্ডপ গড়েছেন ফ্রান্সের এক যাদুঘরের আদলে। সেই যাদুঘরের স্থাপত্য রীতিটাও এ বার তাদের ইউএসপি। সেই যাদুঘরের ভিতরে রয়েছে ফাইবার কাস্টিংয়ের ছাঁচে গড়া পুরাতাত্ত্বিক ঐতিহ্য মণ্ডিত দেবী প্রতিমা। যাদুঘরের আদল দিতে মণ্ডপের ভিতরে দেবীমূর্তির পাশেই আছে নকল প্রহরী, ঝর্না, পরি আরও কতো কিছু। ১৯ লাখ টাকা বাজেটের অযোধ্যানগরকে টেক্কা দিতে ১৫ লাখ টাকা বাজেটের হরিদাসমাটির পশুপতিনাথ মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে বিশালাকার ষাঁড়। আর মন্দিরের ভতরে রয়েছে দেবীপ্রতিমা। কেবল ষাঁড়ের ‘গুঁতো’য় কিস্তিমাত করতে নারাজ ‘হরিদাসমাটি ঐক্যতান সঙ্ঘ’-এর সম্পাদক রবি বসু। তিনি বলেন, ‘‘কোনও সেলিব্রিটিকে দিয়ে উদ্বোধনের কথা ভাবনাটা ছিল আকাশকুসুম কল্পনা। কিন্তু সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে ১৩ অক্টোবর শনিবার চতুর্থীর সন্ধ্যায় নায়িকা পায়েল সরকার আমাদের পুজো উদ্বোধন করবেন। ষষ্ঠীর দিন গান গাইতে আসছেন বাংলাদেশের গায়িকারা।’’ গাঁয়ের পুজোয় দর্শক টানতে তিনি পায়েলকে হাজির করলেও হাত গুটিয়ে বসে নেই তাঁর ‘প্রতিপক্ষ’ অযোধ্যনগর সর্বজনীন।
অযোধ্যানগর সর্বজনীনের দাবি, বহরমপুরের সিংহপুরুষ ‘দাদা’র মতো এই রাজ্যে ‘সেলিব্রিটি’ আর ক’জন আছেন? ‘দাদা’, অর্থাৎ বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। এই পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা মৃন্ময় অধিকারী বলেন, ‘‘বহরমপুরের মানুষের কাছে বহরমপুরের সাংসদই সব থেকে বড় ‘সেলিব্রিটি’। সে কারণে বাইরে থেকে উদ্বোধক ভাড়া করার কথা ভাবিনি। ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় অযোধ্যানগর সর্বজনীনের ৭৪তম পুজোর উদ্বোধন করেবেন আমাদের অধীর চৌধুরী। তাঁর টানেই মণ্ডপ ভরে উঠবে লোকের ভিড়ে।’’
পায়েল না অধীর, নেপাল না ফ্রান্স— কে টানে লোক, সে দিকেই তাকিয়ে এখন দুই পুজোর কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy