Advertisement
E-Paper

ত্রাণের চাল আনতে গিয়ে কোপাইয়ের জলে ভেসে গেল শিশু! বিধায়ক এবং বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ

মৃত শিশুর নাম দিশা বাগদি। ঘরে কোনও খাবার নেই বলে গ্রামের অনতিদূরে ত্রাণ শিবির থেকে চাল আনতে গিয়েছিল সে। তার পরেই দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার দুপুরে জলের তোড়ে ভেসে যায় ওই শিশুকন্যা।

death

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫
Share
Save

দু’দিন পেটে দানা পড়েনি। ঘরে কিচ্ছুটি ছিল না। খিদের জ্বালা মেটাতে ন’বছরের শিশুটি জল পেরিয়ে যাচ্ছিল ত্রাণ শিবিরে। কিন্তু ত্রাণ শিবির পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই কোপাইয়ের জলের তোড়ে ভেসে গেল সে। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় তার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার ভাড়ুই গ্রামে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বিডিও-কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। আটকে রাখা হয় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকেও।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত শিশুর নাম দিশা বাগদি। ঘরে কোনও খাবার নেই বলে গ্রামের অনতিদূরে ত্রাণ শিবির থেকে চাল আনতে গিয়েছিল সে। তার পরেই ওই দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার দুপুরে জলের তোড়ে ভেসে যায় শিশুকন্যাটি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় মেয়েটির দেহ মেলে। তার পরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রাখা হয় স্থানীয় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে। অভিযোগ ওঠে, দুর্ঘটনার সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও রকম সাহায্য পাওয়া যায়নি।

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়েছে কোপাই নদীতে। জলস্তর বেড়ে প্লাবিত হয়েছে দু’কূল। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রামে। অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন। জলবন্দি অনেকের বাড়িতে খাবার নেই। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার সকাল জলস্তর বাড়ছিল নদীতে। গ্রামে আরও জল ঢুকেছে। বিপর্যয়ের কারণে অন্য গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।‌ তার মধ্যে ত্রাণ শিবিরে চাল আনতে গিয়েছিল দিশা। মৃতার বাবা বাবু বাগদি বলেন, ‘‘ঘরে খাবার ছিল না। ত্রাণ শিবিরে চাল দেওয়া হচ্ছে শুনে এক আত্মীয়ের সঙ্গে ও ছুটে গিয়েছিল। ফেরার পথে জল বেড়ে যাওয়ায় জলের টানে ভেসে যায় মেয়েটা।’’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘প্রশাসনের কেউ সেখানে উপস্থিত ছিল না।’’ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী টুম্পা বাগদি বলেন, ‘‘বার বার জানানো হলেও এক ঘণ্টার মধ্যে একটা স্পিডবোট পাঠায়নি প্রশাসন।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ঘরে খাবার থাকলে এ ভাবে বেঘোরে প্রাণ যেত না মেয়েটির।’’

এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন বড়ঞার বিডিও গোবিন্দ দাস। তিনি বলেন, ‘‘গতকাল (সোমবার) পর্যন্তও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে হঠাৎ করে জলস্তর বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। প্রত্যেককে ত্রাণ শিবিরে আসার জন্য বলা হয়েছিল। আগে কেউ আসতে রাজি হয়নি। এই ঘটনার পর জেলা থেকে স্পিডবোট আনা হয়েছে।’’ বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ বলেন, ‘‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা এলাকায় আগে কখনও ঘটেনি।’’ তিনি জানান, মানুষের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে। মৃত শিশুর পরিবারকে সরকারি তরফে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন বিধায়ক।

flood Death Jiban Krishna Saha Murshidbad

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}