আবর্জনা ফেলার জায়গার বড় অভাব বহরমপুর শহরে। গৃহস্থের আর্বজনা ফেলার জন্য পাড়ায় আর আগের মতো ‘ভ্যাট’ নেই। শহরের আবর্জনা ট্রাক্টরে করে কুড়িয়ে নিয়ে গিয়ে রিং রোডে ফেলা হয়। সেখানও আবর্জনায় ভরাট হয়ে গিয়ে জায়গার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ তো বটেই, সেই সঙ্কটের সমাধানের দাবিতে গত ২৯ জুলাই বহরমপুর পুরসভার সাফাই কর্মীরা পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘পাহাড়ের মতো অত উঁচুতে আবর্জনা বোঝই ট্রাক্টর তোলা সম্ভব নয়।’’ এ ছাড়াও ভোর থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত ঢাকনা ছাড়া কিছু খোলা ট্রাক্টরে আবর্জনা নিয়ে যাওয়া ফলে পথচারীদের গায়ে আবর্জনা ছিটকে পড়ে।
অভিযোগ মেনে নিয়েছেন বহরমপুর পুরসভার প্রশাসক, তথা বহরমপুর মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আবর্জনা ফেলার নতুন জায়গার খোঁজ চলছে।’’ অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠেছে বহু প্রাচীন এই শহর। তবুও এক সময় শহরে পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় বিভিন্ন পাড়ায় আবর্জনা ফেলার ‘ভ্যাট’ ছিল। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবাসনের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে উধাও হয়েছে ‘ভ্যাট’। চূড়ামন চৌধুরী লেনের সমিত মণ্ডল বলেন, ‘‘ ৪০০ মিটার দূরে মেরি ইমাকুলেটের দেওয়ালে পাশে, নয় তো ৩৫০ মিটার দূরের বারো বিঘা কবর খানার উত্তরপ্রান্তে আবর্জনা ফেলতে হয়।’’ আবর্জনা জমে রিং রোডের ধাপা পাহাড়ের চেহারা নিয়েছে।
দুপুর ২টো পর্যন্ত আবর্জনা জমে থাকে গোরাবাজার রাজামিঞার মোড় ও নবারুণ সমিতির মধ্যবর্তী এলাকায় ওল্ড পুলিশ লাইনে, কুমার হস্টেলের উত্তরে ও বটতলার পূর্বে ঘোষপাড়ায়, মোহনা বাস টার্মিনাস লাগোয়া প্রাঙ্গণ মার্কেটের সামনে, সৈয়দাবাদ এলাকার মূক ও বধির বিদ্যালয়ের সামনে। এ রকম অবস্থা শহরের আরও অনেক এলাকার। পুরসভার তথ্য অনুসারে, দৈনিক বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে থেকে বহরমপুর শহরে আসা লোকজন ও শহরের স্থায়ী বাসিন্দা মিলিয়ে ২০১০ সালে দৈনিক দু’লক্ষ মানুষের আনাগোনা ছিল। তখন দৈনিক আবর্জনার পরিমান ছিল ৫ মেট্রিক টন। এখন সেখানে দৈনিক সাড়ে তিন লক্ষ লোকজনের আনাগোনার ফলে দৈনিক আবর্জনার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ মেট্রিক টনে।
বহরমপুর পুরসভার প্রকল্প সমন্বায়ক নাডুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বিপুল পরিমাণ আবর্জনা ঠিক মতো সাফাই করার মতো পরিকাঠামো নেই। অর্থের অভাবে লোকবল-সহ যাবতীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।’’ পুরসভার নিজস্ব ২৭টি ট্রাক্টরে দৈনিক
আবর্জনা সাফাই কর হয়। নাড়ুগোপাল বলেন, ‘‘অতিরিক্ত আবর্জনা ফেলার জন্য হঠাৎ ট্রাক্টর ভাড়া করতে হয়। তখন কিছু ট্রাক্টরে ঢাকনা থাকে না।’’ তবে নাগরিকের বেশি দুর্ভোগ হয় রবিবার ও সোমবার। রবিবার সাফাই বন্ধ থাকায় দুর্গন্ধ বাড়ে। দু’দিনের আবর্জনা এক দিনে সাফাই করতে দুপুর গড়িয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy