গঙ্গার জল ঢুকেছে লোকালয়ে। শান্তিপুর নৃসিংহপুরঘাটে। সোমবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
নিম্নচাপ কেটে গিয়েছে। কিন্তু তার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টির জেরে ভাসছে নদিয়া। নবদ্বীপ, মায়াপুর, শান্তিপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় গঙ্গার জলস্তর গত দু’দিনে কয়েক ফুট বেড়ে সোমবার সকালে বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায়। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে স্বরূপগঞ্জের কাছে তা ছিল ৮.৬৫ মিটার, যেখানে বিপদসীমা ৮.৪৪ মিটার এবং চূড়ান্ত বিপদসীমা ৯.০৫ মিটার। পাশাপাশি চূর্ণী ও মাথাভাঙার জলস্তরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবারও বৃষ্টি হয়েছে কিছু জায়গায়।
রবিবার থেকেই নদীর জল উপচে ঢুকতে শুরু করেছিল নাকাশিপাড়া ব্লকে নদী সংলগ্ন নিচু এলাকায়। কুলেপোতায় জল ঢুকেছে কৃষি জমিতে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বেথুয়াডহরি থেকে অগ্রদ্বীপ যাওয়ার রাস্তাও। রবিবারই সেখানে যান নাকাশিপড়ার বিডিও। জলস্ফীতির ফলে নদী তীরবর্তী কিছু অঞ্চল যেমন নবদ্বীপের ইদ্রাকপুর, মহিশুরার নিচু এলাকায় জল ঢুকেছে। নবদ্বীপের বিডিও বরুণাশিস সরকার জানান, এ দিন চর এলাকার ১৬টি পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাঁর আশ্বাস, “ভয়ের কারণ নেই। জলস্তর আর বিশেষ বাড়বে না বলেই খবর।”
শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটেও নদী সংলগ্ন এলাকায় পাড় ছাপিয়ে বেশ কিছুটা ঢুকে পড়েছে জল। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরে জল ঢোকেনি। সম্প্রতি শান্তিপুরের বেশ কিছু এলাকা একাধিক বার ভাঙনের কবলে পড়েছে। সেই সমস্ত এলাকায় নজর রাখা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হরিপুরের চৌধুরীপাড়া ছাড়াও বেলগড়িয়া ১ ও ২ এবং গয়েশপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ত্রাণ শিবির তৈরি রাখা হচ্ছে। তবে কাউকে শিবিরে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সোমবার নৃসিংহপুরে পরিদর্শনে গিয়ে শান্তিপুরের বিডিও প্রণয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “সতর্কতামূলক যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
রবিবার সন্ধ্যায় মুষলধার বৃষ্টিতে নবদ্বীপ পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডের নিচু এলাকা জল জমে গিয়েছে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলবাগান এলাকা নিচু হওয়ায় বৃষ্টির জল বহু বাড়িতে ঢুকে পড়েছে। গঙ্গার জলস্তর শহরের থেকে বেশি উচ্চতায় থাকায় জমা জল বেরোতে পারছে না। পুরপ্রশাসক পর্ষদের সদস্য এবং জল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিহিরকান্তি পাল বলেন, “গঙ্গার সংযোগ রক্ষাকারী পাঁচটি লকগেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তা না হলে গঙ্গার জল শহরে ঢুকে পড়বে। এই অবস্থায় শহরে জমা জল বেরোতে বিলম্ব হচ্ছে।”
নবদ্বীপের প্রতাপনগর ও প্রাচীন মায়াপুরের একাধিক কলোনিতে রাস্তা ও বাড়ির উঠোন জলমগ্ন। কয়েকটি পরিবার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। নবদ্বীপ পুর প্রশাসক পর্ষদের চেয়ারপার্সন বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “নিচু এলাকায় পাম্প বসিয়ে জল বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী পাড় সংলগ্ন কিছু জায়গা জলমগ্ন হয়েছে। তবে নদীবাঁধগুলি সুরক্ষিত রয়েছে। সেচ দফতর এবং প্রশাসনের তরফে নজরদারি চলছে জেলা জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy