Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ganga

কুয়াশায় প্রাণ হাতে করে গঙ্গা পারাপার

জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বহরমপুরে মোট চারটি ঘাটে নৌকোয় যাত্রী পারাপার হয়। তার মধ্যে রাধারঘাট, গোপালঘাট, গোরাবাজারঘাট, ফরাসডাঙা ঘাট রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, শীতকালে কোনও ফেরিঘাটেই যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।

এভাবেই নদী পারাপার, গোরাবাজার ফেরিঘাটে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী।

এভাবেই নদী পারাপার, গোরাবাজার ফেরিঘাটে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

গভীর রাত থেকেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে সবকিছু। এই সময় সড়ক থেকে জলপথে যান চলাচলে একগুচ্ছ সতর্কতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তার পরেও শহরের ফেরিঘাটগুলিতে অনিয়মের ছবি ধরা পড়ছে। কোথাও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঘাট পারাপার করা হচ্ছে। কোথাও আবার নামমাত্র এক জন বা দু’জন যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট পরতে দেখা যাচ্ছে। যাত্রীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষও।

যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বরের দাবি, ‘‘কুয়াশা পড়তে শুরু করার পর থেকেই বিভিন্ন ফেরিঘাটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজর রাখা হচ্ছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের দাবি খতিয়ে দেখা হবে।"

জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বহরমপুরে মোট চারটি ঘাটে নৌকোয় যাত্রী পারাপার হয়। তার মধ্যে রাধারঘাট, গোপালঘাট, গোরাবাজারঘাট, ফরাসডাঙা ঘাট রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, শীতকালে কোনও ফেরিঘাটেই যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। গোরাবাজারের হরিদাসমাটির বাসিন্দা শ্যামসুন্দর বসু বলেন, ‘‘রোজই গঙ্গা পেরোতে হয়। কয়েক দিন ধরে কুয়াশা পড়ছে। তার মধ্যে নৌকোয় পারাপার করা মানে জীবন হাতে নিয়ে চলাচল করা। লাইফ জ্যাকেট থাকলেও তা পরা সম্ভব হয় না। রাতে ঝুঁকি আরও বেশি।’’

গোরাবাজার ফেরিঘাটের ওপারে রয়েছে বাজারপাড়া ফেরিঘাট। সেখানেই ফেরিঘাটের কার্যালয় রয়েছে। সেখানকার এক কর্মী আসিক ইকবাল বলেন, ‘‘কুয়াশার মধ্যে নৌকো চালানো হয় না। যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকটি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’’

অন্যদিকে, বহরমপুরের রাধারঘাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ঘাটে মোট তিনটি নৌকো রয়েছে। যার মধ্যে দু’টি নৌকো চালু। জরুরি পরিষেবার জন্য আরও একটি নৌকো রাখা হয়েছে।

সেখানকার কর্মীরা জানান, ফেরিঘাটে দু’জন জলসাথীর সদস্য রয়েছে। তাঁরা সব সময় নজরদারি চালায়। তবে তাঁদেরও অভিযোগ, সন্ধ্যার পর নৌকোর যাত্রীদের সতর্ক করার জন্য একমাত্র ভরসা একটিমাত্র নাইট ভিশন ক্যামেরা। নৌকোয় লাগিয়ে রাখা লাল আলো দেখে সন্ধ্যার পর নৌকোর গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। এছাড়া, দু’টি ফেরিঘাটে রয়েছে দু’টি হাইমাস্ট আলোরও। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের কর্মীদের অভিযোগ, এই সামান্য নাইট ভিশন ক্যামেরা ও কয়েকটি লাইফ জ্যাকেট যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে তাঁরা তাঁদের দাবি জানিয়েছেন।

রাধারঘাটের ফেরিঘাটের এক ‘জলসাথী’র সদস্য সীতাব্জ মণ্ডল বলেন, ‘‘এমনিতে সন্ধ্যা সাতটার পর আর নৌকো চালানো যায় না। জরুরি পরিষেবার জন্য মাঝেমধ্যে নৌকো চলে। তবে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। কুয়াশার মধ্যে আচমকা দুর্ঘটনা ঘটলে লাইফ জ্যাকেট আর নাইটভিশন ক্যামেরা ভরসা। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।"

ওই ফেরিঘাট যিনি লিজে নিয়েছেন সেই চন্দন ঘোষের দাবি, ‘‘ফেরিঘাটে কোনও জেটির ব্যবস্থা নেই। ফলে বাঁশের মাচা ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে। মাইকিং করে যাত্রীদের সতর্ক করা হয়। তবে দুর্ঘটনা ঘটার অপেক্ষা না করে প্রশাসন ফেরিঘাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ganga Mist Boat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy