গ্রেফতার: পুলিশের জালে আগ্নেয়াস্ত্র সহ ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনী সন্ত্রাসের সঙ্গে বেলডাঙার পরিচয় অনেক দিনের। ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন রক্ত ঝরেছে বেলডাঙার বিভিন্ন প্রান্তে। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে একাধিক ব্যক্তির। আবার ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচন কড়া নাড়ছে দুয়ারে। ফলে সন্ত্রাসের আবহ ফেরার আশঙ্কা রয়েছে বেলডাঙায়। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ঘিরে চিন্তা বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, আগ্নেয়াস্ত্র যত উদ্ধার হচ্ছে, তার চেয়েও বেশি থেকে যেতে পারে। সব থেকে বড় কথা হল, বেআইনি অস্ত্র এই এলাকায় আসছে কী করে?
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মার্চ মিলে বেলডাঙার গ্রামীণ এলাকায় ৯টি বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। প্রতিটা ক্ষেত্রেই পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেছে। গত ২১ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি মোট ৩ টি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলডাঙার কুমারপুর মোড় থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করে বেলডাঙা থানার পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম কাজল শেখ বাড়ি বেলডাঙার মহ্যমপুর গ্রামে। ১৭ মার্চ বেলডাঙার ঝুনকা থেকে দুটো পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে এক ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম নাজমুল শেখ। তাকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ মেলে। বুধবার দৌলতাবাদের কালুপুর নওদাপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অস্ত্র-সহ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে দৌলতাবাদ থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মোজাম্মেল শেখের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। ওই গ্রাম থেকে বোমা উদ্ধারের সঙ্গে এই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি আস্ত্র কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশ জেলা জুড়ে তল্লাশি শুরু করেছে। যার জেরে প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোনও না কোনও প্রান্ত থেকে কোথাও অস্ত্র, কোথাও বোমা বা গুলি উদ্ধার হচ্ছে।
অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, বেলডাঙায় অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। বেলডাঙার বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন মহ্যমপুর, মির্জাপুর, কাজিসাহা, কাপাসডাঙা, চৈতন্যপুর ১ পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা, সুজাপুর, দেবকুণ্ড এলাকায় নানা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। অনেক মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। গত ২০১৩ সালের গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনে বেলডাঙা কাজিসাহা গ্রামে এক মহিলা ভোট দিতে যাচ্ছিলেন ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে। বোমায় তাঁর মৃত্যু হয়। গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন বেলডাঙা কুমারপুর গ্রামে ভোটগ্রহণ চলাকালীন মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের। এ ছাড়া বোমা বানাতে গিয়ে, বোমার আঘাতে মৃত্যু, বন্দুকের ছোড়া গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা অনেক ঘটেছে, এলাকার মানুষ তা জানেন।
এই অবস্থায় চলতি বছরে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। এতে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই অস্ত্র কিছু অতীতে সংগ্রহ করা অস্ত্র। সেগুলো মূলত স্থানীয় ভাবে ভয় দেখাতে বা ক্ষণিকের চাঞ্চল্য তৈরি করে কাজ হাসিলের জন্য ব্যবহৃত হয়। সম্পত্তি হস্তান্তর থেকে অসাধু কারবারে অনেক মানুষ যুক্ত। সেই কাজে মানুষকে অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়। পুলিশ পঞ্চায়েত ভোটের আগে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করছে। তবে সেই সব অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy