করিমপুরে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে সর্ষে খেত। নিজস্ব চিত্র।
হালকা বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশায় শীতের সর্ষে, গম, ছোলা, মুসুরি-সহ অন্যান্য ফসল থেকে শুরু করে আনাজের লাভক্ষতি নিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ঝলমলে রোদের পাশাপশি কনকনে ঠান্ডা এটাই সাধারণত হয়ে থাকে কিন্তু এ বারে ডিসেম্বর শেষ হতে চললেও সেই ভাবে শীতের দেখা নেই। তার উপর দুপুর পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় রবি ফসল ক্ষতির মুখে। ফলে চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ।
করিমপুর এলাকার চাষীরা জানাচ্ছেন, শাক-আনাজ ফসলের শীতকালীন সময় মাঠে সর্ষে, মুসুর, ধনে, কালোজিরা, গম, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি ফসল এই সময় চাষের জমিতে থাকে। তবে এ বছর এমন ভাবে ঠান্ডা না-পড়ায় জমির ফসলে কিছু কিছু রোগ দেখা দিচ্ছে। তাই ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
করিমপুর থানার গোয়াস গ্রামের এক চাষি হাফিজুল মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রায় দু’বিঘা জমিতে মোটামুটি দশ সপ্তাহ আগে সর্ষে বীজ বপন করেছিলাম। সপ্তাহ খানেক আগে পর্যন্ত জমির সর্ষে গাছ বেশ ভাল ছিল। বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি সর্ষের ফলে রোগ লেগেছে। ফল সাদা হয়ে যাচ্ছে।’’ বেলা ১১টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারদিক। এই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়াতে গাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন তার মতো অনেক সর্ষে চাষি।
এই সময় মাঠের সর্ষের অর্ধেক জমির গাছে ফুল রয়েছে। সোমবার রাতে হালকা বৃষ্টির পর অত্যাধিক কুয়াশায় সেই ফুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। শুধু সর্ষে নয়, মাঠে এখন ধনে, মটর, সিম প্রভৃতি যে গাছের ফুল ফুটে রয়েছে সব কিছুরই কম বেশি ক্ষতি হবে বলে চাষিরা জানান।
হোগোলবাড়িয়ার স্বপনপুরের এক কপি চাষি বলেন, ‘‘বর্তমানে এমনিতেই ফুল ও বাঁধাকপির দাম অনেকটাই কম। ঘন কুয়াশায় ফুলকপির রং কালচে হয়ে যাচ্ছিল। আর গত রাতের বৃষ্টিতে ফুলকপিতে গোল গোল কালো দাগ তৈরি হবে। সেই ফুলকপি বাজারে বিক্রি করা যাবে না।’’
চাষিদের একাংশ জানান, ভরা শীত মরশুমের অল্প ক্ষণের বৃষ্টিতে আলুর ক্ষতি না-হলেও আলুগাছের ক্ষতি হবে। পাতা কুঁকড়ে যাবে ফলে আলুর ফলন কমবে। তবে সিমের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানাচ্ছেন করিমপুরের এক আনাজ চাষি আলাহিম মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিটি জমির সিম গাছ এখন ফুলে ভর্তি। এই গাছের ওই ফুল থেকে আর সিম পাওয়া যাবে না। ফুলের গোড়ায় কালো ছত্রাক জন্মাবে। তাই বৃষ্টিতে ফুল-জালি পচে যাবে।’’
করিমপুর ২ ব্লকের ভারপ্রাপ্ত কৃষি আধিকারিক সুমন দে জানান, যে সব চাষিরা সঠিক সময়ে সর্ষে লাগিয়েছিলেন তাঁদের অধিকাংশেরই গাছে ফুল ধরেছে। বৃষ্টি হওয়ায় ফুল ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সঙ্গে মেঘলা আকাশ এবং কুয়াশা দেখা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় ছত্রাকজাতীয় রোগের প্রকোপ দেখা দেখা দিতে পারে। যেমন অলটারনেরিয়া ব্লাইট, কাণ্ডে সাদা ছোপ, গোড়া পচা। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে চাষিরা কার্বনডাজিম ও মেনকোজেব জাতীয় ওষুধ প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম করে গুলে ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় গাছে স্প্রে করতে ফল পাওয়া যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy