চলছে নাড়াপোড়া। নিজস্ব চিত্র।
বায়ুদূষণ রুখতে প্রশাসনিক ভাবে চাষের জমিতে নাড়াপোড়া নিষিদ্ধ হয়েছে বহু আগেই। কিন্তপ তার পরেও এই পরিবেশের ক্ষতিকর কাজটি হয়েই চলেছে বলে অভিযোগ।
যে কারণে প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। গত বছর দিল্লিতে ভয়াবহ বায়ুদূষণ রুখতে কড়া অবস্থান নিয়েছিল দিল্লি প্রশাসন। সেখানেই পরিবেশ সংক্রান্ত সমীক্ষায় ওঠে আসে বায়ুদূষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে কৃষিজমির নাড়াপোড়া। দিল্লির ওই দূষণের জন্য দায়ী করা হয়েছিল পড়শি কয়েকটি রাজ্যে হরিয়ানা, পঞ্জাবের চাষিদের গমের উচ্ছিষ্ট অংশ নাড়া পোড়ানোকে। কিন্তু তার পরেও এই রাজ্যে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়নি। চাষিদের অসাবধানতায় নদিয়া জেলার বহু জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে নাড়াপোড়ার মতো বায়ুদূষণকারী ঘটনা।
জমি থেকে ফসল কেটে নেওয়ার পরে ফসলের বাকি অংশ জমিতেই পোড়ানো চলবে না, এই মর্মে আগেই নির্দেশ জারি করেছিল কৃষি দফতর। কারণ, নাড়াপোড়ার ফলে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতি হয় কৃষি জমিরও। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে, প্রশাসনিক নির্দেশের তোয়াক্কা না করে অধিকাংশ জমিতেই আগুন লাগিয়ে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো চলছে নিয়মিত। যার জেরে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণ।
কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নাড়া পোড়ালে জমি উর্বর হয়, এটা চাষিদের সাধারণ ধারণা। কিন্তু এতে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টে মাটিতে থাকা চাষের জন্য উপকারী পোকামাকড়, বীজাণু মরে যায়। যাতে আখেরে ক্ষতি হয় উর্বর চাষজমি তথা পরিবেশেরও।
কৃষি দফতরের নিষেধাজ্ঞার থাকার পরেও জমিতে আগুন লাগানো চলছে বলে অভিযোগ করছে স্থানীয়দের একাংশ। কালীগঞ্জ ব্লকের কালীগঞ্জ, পলাশি, দেবগ্রামের বেশ কিছু এলাকায় নাড়াপোড়া দেখা যাচ্ছে নিয়মিত।
পরিবেশকর্মী তথা স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, আখ, ধান বা সরষে জাতীয় ফসল কাটার পর যে নাড়া জমিতে পরে থাকে, তাতে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় চাষিরা। সেখানে আগুনের তেজ এতটাই বেশি থাকে যে অনেক সময় পাশের জমির ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশ ও জমির ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাই ওই সব চাষিকে সচেতন করার দাবি তুলছেন তাঁরা। একইসঙ্গে দাবি, শুধু নির্দেশ জারি করলেই চলবে না, নাড়াপোড়া রুখতে নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে।
রাধাকান্তপুরে এক চাষী মুকুল শেখ বলেন, ‘‘অনেক চাষি জানেনই না ওঁরা নিজেরাই নিজেদের জমির ক্ষতি করছেন। কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে আরও বেশি প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে। তবেই চাষিদের নাড়াপোড়া নিয়ে সচেতন করা সম্ভব হবে।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ও আলোচনার মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। নানা জায়গায় ফ্লেক্স-ব্যানার ঝুলিয়ে নাড়াপোড়া বিরোধী প্রচার করা চলছে। কৃষি দফতরের দাবি, এর জেরে আগের চেয়ে জমিতে আগুন দেওয়ার পরিমাণ অনেকটাই কমেছে।
এই বিষয়ে নদিয়া জেলার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘গত এক মাস ধরে প্রতিটি ব্লকে ব্লকে মাইক লাগিয়ে, ফ্লেক্স ঝুলিয়ে এবং চাষিদের সঙ্গে বসে এই বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। তবে এর পরেও যদি সচেতনতার অভাব থাকে, তা হলে আরও প্রচার করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy