—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মেঝেতেও ডেঙ্গি রোগী রাখার ঠাঁই নেই রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। বাধ্য হয়ে বছর পঁচিশের এক যুবককে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর পরিবার। সম্বল বলতে রাজ্য সরকারের দেওয়া 'স্বাস্থ্য সাথী' কার্ড। কিন্তু সেই কার্ডে ডেঙ্গির চিকিৎসা মেলেনি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে শহরের আরও একটি নার্সিংহোমে যান রোগীর পরিবারের লোকজন। সেখানেও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে ডেঙ্গির চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
রবিবার এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে পায়রাডাঙার বাসিন্দা সন্দীপ বিশ্বাসের। তিনি বলেন, "আমার ছেলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। অথচ স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা ধার করেছি।"
ডেঙ্গি নিয়ে নদিয়া জুড়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শেষ চার মাসে এক হাজার অতিক্রম করেছে। বিশেষ করে জেলার দক্ষিণে রানাঘাট ও কল্যাণী মহকুমায় লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও কোনও সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলা হয়নি। ফলে ‘ঠাঁই নাই’ দশা। বাধ্য হয়ে অনেকেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ভরসায় রোগী নিয়ে নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন। কিন্তু ওই কার্ডের মাধ্যমে ডেঙ্গির চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিচ্ছে এদের বেশির ভাগই।
এ দিন বিকালে রানাঘাটে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে থাকা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, ডেঙ্গি আক্রান্তদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা মিলছে না। একই কথা জানায় রানাঘাট শহর লাগোয়া আঁইশতলার একটি নার্সিংহোমও। এদের কারও দাবি, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের বকেয়া টাকা মেটায়নি রাজ্য সরকার। কারও দাবি, যে সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাওয়া যায়, তার মধ্যে ডেঙ্গির উল্লেখ নেই।
নদিয়া জেলার ওসি হেল্থ গোবিন্দ হালদার অবশ্য বলছেন, "এ এবং বি ক্যাটাগরিতে থাকা বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে ডেঙ্গির চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব। তারা যদি এই পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে, সে ক্ষেত্রে সরাসরি আমাদের কাছে অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।"
তবে রাতে রানাঘাটের ওই বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজার অনির্বাণ ঘোষ দাবি করেন, "স্বাস্থ্য ভবনের বৈঠকে আমাদের মতো এ-ক্যাটাগরির বেসরকারি হাসপাতালগুলির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কম খরচে ডেঙ্গির মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য ভবনও তা মেনে নিয়েছে। তাই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে ডেঙ্গির চিকিৎসা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।"
রানাঘাটের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকারের দাবি, "স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের নামে ভাঁওতা দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাস্তব চিত্রটা আজ বাংলার মানুষ বুঝতে পারছেন।"
তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, "ওঁদের নেতা দিলীপ ঘোষের পরিবারই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল। বিজেপির মুখে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে একটি কথাও মানায় না।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy