জেএনএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
‘থ্রেট সিন্ডিকেট’ ও নানা অনিয়মের যুক্ত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার মধ্যে তাঁদের হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কিছু বহিষ্কৃত পড়ুয়া শুক্রবার রাত পর্যন্ত হস্টেলে থেকে গিয়েছেন বলে কল্যাণী জেএনএম সূত্রের খবর।
কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের ওই ৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে এক সিমেস্টার অর্থাৎ ছ’মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এই তালিকায় ২৯ জন ছাত্র এবং ১১ জন ছাত্রী রয়েছেন। তদন্তের প্রয়োজনে ডেকে পাঠানো না হলে এই ছ’মাস তাঁরা কলেজ, হস্টেল বা হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন না। অবিলম্বে তাঁদের হস্টেল ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই রাতেই কয়েক জন হস্টেল ছাড়েন। শুক্রবার সকাল থেকেও বেশ কিছু বহিষ্কৃত পড়ুয়া হস্টেল ছেড়েছেন। কিন্তু কয়েক জন রাত পর্যন্ত হস্টেলে রয়ে গিয়েছেন এবং তার মধ্যে মূল অভিযুক্ত দু’জন রয়েছেন বলে জেএনএম সূত্রের খবর।
এ দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জেএনএমের প্রাক্তন পড়ুয়ারা কলেজে এসে জড়ো হন। বর্তমান পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা একটি ই-মেল আইডি দেন যেখানে ছাত্রছাত্রীরা অনিয়ম বা যে কোনও ধরনের নির্যাতনের কথা জানাতে পারবেন। সর্বতো ভাবে পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রাক্তনেরা।
তবে কলেজ সূত্রের খবর, বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের একাংশ হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। কয়েক জন বহিষ্কৃত ছাত্রী আবার হস্টেলের অন্য আবাসিকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনড়। যাঁরা নির্দেশ অমান্য করে হস্টেলে থাকছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেএনএমের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “বহিষ্কৃতদের হস্টেল ছাড়তেই হবে।”
গত কয়েক বছর ধরেই ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ‘ফাদার’ অভীক দে-র বরাভয়ে কল্যাণী জেএনএমে থ্রেট সিন্ডিকেট ও তোলাবাজির চক্র গড়ে উঠেছিল। তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটি’ তার কেন্দ্রে ছিল বলে অভিযোগ। নানা অছিলায় পড়ুয়াদের থেকে টাকা আদায়, মারধর, পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, আর জি করে স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রীর ধর্ষণ-খুনের আগেই জেএনএমের এই অপরাধ-চক্র সামনে আসতে শুরু করেছিল। কিন্তু সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আতঙ্কে মুখ খুলতে পারছিলেন না। কিন্তু আর জি করের ঘটনার অভিঘাতে অভীক দে-র সাসপেন্ড হওয়া এবং এই চক্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জেএনএমের তৎকালীন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অপসারণের পরে পাশা উল্টে যায়। সাধারণ পড়ুয়ারা মুখ খুলতে থাকেন।
জেএনএমে নবগঠিত অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি বৃহস্পতিবার প্রথমে চার জনকে মূল পান্ডা হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। এঁরা হলেন স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র শেখ মহম্মদ অখিল, ইন্টার্ন আলিম বিশ্বাস, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তথা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটির বর্তমান সভাপতি বিচিত্রকান্তি বালা এবং ওই বর্ষেরই ছাত্র আব্দুল হালিম দফাদার। এঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার সুপারিশ করা হয়। এর পর কলেজ কাউন্সেলিংয়ের বৈঠকে আরও এক ধাপ এগিয়ে মোট ৪০ জনকে চিহ্নিত করে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেএনএমের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “পড়ুয়াদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সেটা করা হচ্ছে। এর কোনও রকম অন্যথা হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy