নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এবার এনআইএ-র জেরার মুখে পড়লেন সুতির প্রাক্তন বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র
নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এবার এনআইএ-র জেরার মুখে পড়লেন সুতির প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিধানসভা নির্বাচনে এ বারের তৃণমূল প্রার্থী ইমানি বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে কলকাতায় এনআইএ-র সদর দফতরে ইমানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এনআইএ-র অফিসারেরা।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রেল স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাওয়ার সময় ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপর বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। জাকির সহ ২৬ জন আহত হন, যাদের মধ্যে মন্ত্রী সহ কয়েক জনের এখনও চিকিৎসা চলছে কলকাতায়। এই বোমা হামলার তদন্ত ভার রাজ্য সরকার সি আইডি সহ রাজ্য পুলিশের তিনটি সংস্থার উপর দেয়। প্রায় দু সপ্তাহ ধরে চলা সিআইডি তদন্তে ২ জন ধরাও পড়ে। দুজনেই সুতি এলাকার বাসিন্দা এবং দুজনেই অন্তরঙ্গ বন্ধু।
সুতি থেকেই ধরা হয় সুতির রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু সামাদকে। সিআইডি-র অফিসারদের দাবি, ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে নিমতিতা রেল স্টেশনে মন্ত্রীর উপর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলার কথা স্বীকার করে সে। বহু আগে থেকে পরিকল্পনা করেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
এর সঙ্গে জড়িত আরও কয়েক জনের নাম পায় সিআইডি। মন্ত্রী ট্রেন ধরতে স্টেশনে আসছেন জেনে আবু সামাদই প্ল্যাটফর্মে ব্যাগ ভর্তি বিস্ফোটক রেখে আসে। সিআইডি পরদিনই ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে শহিদুল শেখ নামে আরও
এক ব্যক্তিকে।
বছর ৪৫ বয়সের শহিদুলেরও আসল বাড়ি অরঙ্গাবাদের মৌলভীপাড়া, মন্ত্রী জাকিরের বাড়ির ঠিক পিছনেই।
২ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত ভার নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ। পরদিন এন আই এ অফিসারেরা নিমতিতা রেল স্টেশনে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং রেল কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হয় এনআইএ যে মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলা চালাতেই যে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এরপরই সুতির তৃণমূল নেতা ইমানি বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠায় এনআইএ মঙ্গলবার সন্ধ্যেয়। সেই নোটিস পেয়েই বৃহস্পতিবার এন আই এ’র দফতরে যান ইমানি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ।
দু’দফায় প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে।
জাকির এবং ইমানি দুজনেই অরঙ্গাবাদের বাসিন্দা। দুজনেই বিড়ি কারখানার মালিক।
দুজনেই তৃণমূলের নেতা হলেও জাকিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জঙ্গিপুর বিধানসভাকে ঘিরে। আর ইমানির কেন্দ্র সুতি। একই দল হলেও দুজনের সঙ্গে সম্পর্ক সাপে নেউলে।
বর্তমান বিধানসভা নির্বাচনেও তাদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি আরও বেড়েছে।
এদিন ইমানি এনআইএ-র জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও কথা বলতে চাননি। বলেন, ‘‘মঙ্গলবার নোটিস পেয়েছি। বৃহস্পতিবার তাদের সঙ্গে দেখা করেছি। সব প্রশ্নের
উত্তর দিয়েছি।’’
তবে অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এনআইএ অফিসারেরা তার কথায় সন্তুষ্ট হননি। তাই ইমানি বিশ্বাসের দেওয়া জবাব নিয়ে ধৃত দুজনের সঙ্গে ফের কথা বলবেন অফিসারেরা। কথা বলবেন মন্ত্রী জাকির হোসেনের সঙ্গেও। সেক্ষেত্রে আবারও তলব করা হতে পারে ইমানিকে।
এন আই এ’র তদন্তকারী অফিসারদের সন্দেহ, যে দুজনকে ধরা হয়েছে তারা উপলক্ষ্য মাত্র। তাদের দিয়ে কেউ এ কাজ করিয়েছে। তাই জাকির হোসেনের সঙ্গে কার কার, কি নিয়ে বিরোধ সেটাই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy